ট্যাকশের-গান-গাই , proggapath, progga, bangla literature, bangla kobita, bangla golpo, babgla story, romantic golpo, আবুল মনসুর আহমদ, taxer gaan gai

ট্যাকশের গান গাই

০ মন্তব্য দর্শক

ট্যাক্শের গান গাই —
আমার চক্ষে ট্যাক্‌শে ও করে কোন ভেদাভেদ নাই ৷
বিশ্বে যা-কিছু অনাসৃষ্টি, চির অকল্যাণকর
অর্ধেক তার আনিয়াছে ট্যাক্‌শ অর্ধেক তার কর ।
ট্যাক্শের গাই গান—
ট্যাকশের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান ।
বিশ্বে যা-কিছু স্থায়ী দেখিতেছ, যাহা কিছু টেক্‌সই
অর্ধেক তার গড়িয়াছে কর, অর্ধেক ট্যাক্‌শই ।
ট্যাক্‌শের গান গাই—
আমার চক্ষে ধনী-দরিদ্রের কোন ভেদাভেদ নাই ৷
কে তুমি ? ওঃ চাষী ? মজুর ? ফেরিয়াল ? ভিখারী ? মিন্তি অ
গম -ভূষিওলা ? চারচাকা ঠেলা ? করে যাও যাহা পার।
বন্ধু যা-খুশী হও—
পেঠে পিঠে কাঁধে কোমরে যা খুশী বোঝা ও গাট্টি বও,
কুড়মুড় ভাজা, পিঁয়াজু-ফুট কি চানাচুর বিক্রয়
যা কর বন্ধু, দিতে হবে মোরে বার আনা অক্‌ট্রয় ৷
পুরান-ধুরান ফাটা তেনা পরে লাঠি-ভর ঠক্‌ঠক্
সিমেন্ট বস্তা কাগজের ব্যাগ্ বেচে যাও যত সখ্
হাতের পয়সা ট্যাকে গুঁজিতেছ, ট্যাক, হতে কাঁছা খোল,
কিন্তু, কেন এ পণ্ডশ্রম মগজে হানিছ শূল ?
যতই চেষ্টা কর না বন্ধু, পারিবে না দিতে ফাঁকি
তুমি যদি থাক ডালে-ডালে আমি পাতায়-পাতায় থাকি ।
ট্যাক্‌শে নাই রেহাই
ট্যাক্‌শ কার বেহাই ?
মুনসী পাল সে শ্বশুর বাড়ি সকলে ঘর জামাই
একা সে টানিছে হাল, সকলে খাইছে পর-কামাই ।
ট্যাকশের গাই গান—
যত সেস, টল, টিপ, বখশিশ সব হ্যায় মেরা ভাই ।
‘আর্বান’ আর ‘ওয়াটার’, ‘মেথর’ এরাও নহেক পর,
সকলের মাঝে প্রকাশ তার এ-উহার নির্ভর ।
ট্যাক্শের গাই গান—
আমার চক্ষে জাতি ও বিজাতি নাহি কোন ব্যবধান ।
ট্যাক্‌শে পিষিছে, হিন্দু-বৌদ্ধ মুসলিম খৃশ্চান ৷
নাহি দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ অভেদ ধর্ম-জাতি
সর্বকাজে ট্যাক্‌শ পাতিছে মানবে-দানবে জ্ঞাতি ৷
নেংটি নিঙাড়ি রস-নির্যাস দারিদ্র্য সুমহান ।
ট্যাক্‌শ সাধিছে উচ্চতা আর নীচতার সমাধান ।
ট্যাক্শ হৃদয়হীন ?
ট্যাকশ বিহনে উন্নতি কেউ করিয়াছে কোন দিন ?
নাহক নিন্দ ভাই
ট্যাক শের মতো মহাকালজয়ী দরদী বন্ধু নাই ।
এই ট্যাকশের মহাগদি পরে বসিয়া টোডরমল্ল
মহামোগলের সম রাজ্যের দৃঢ় বুনিয়াদ গড়ল ৷
দিনে-দিনে যত বাড়িতেছে বোঝা ট্যাক্শের পর ট্যাক্শের
কমিতেছে তত রেশনের বোঝা দুইসের হতে একসের।
গাহি ট্যাক্শের জয়গান
নিন্দা যে করে ট্যাকশের হোক মর্দুদ শয়তান ৷
বন্ধু বলিনি ঝুট,
ট্যাক্শের পায়ে লুটাইয়া পড়ে যত তাজ-মুকুট।
ট্যাক্শের দায়ে নিলামে উঠিছে বৃন্দা-সুন্দরবন
বৃদ্ধ-গয়লা জরুর জালেম কিনিছে কলা-ভবন ।
গাহি ট্যাক্শের গান—
ট্যাক্‌শ অর্থ অর্থ ট্যাক্‌শ যেন মুড়ি-চিড়া-ধান
এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল ফলিয়াছে যত ফল
ট্যাক্‌শ দিয়াছে রূপ-রস তাহে গন্ধ সুনির্মল।
তাজমহলের পাথরে দেখেছে মমতাজ- সাজাহান
ট্যাক্‌শ-খাজনা না হইলে উহা কে করিত নির্মাণ ?
মসজিদ বল, মন্দির বল, গির্জাই বল ভাই
ট্যাক্‌শ ব্যতীত কোন বা কিছুই চালাবার কল নাই ৷
ট্যাক্শের গান গাই ।

গাহি ট্যাক্‌শের গীত
আমার চক্ষে শরৎ-গ্রীষ্ম নাহিক বর্ষা-শীত।
সকল ঋতুতে হরেক লগ্নে উদ্যত সে পীরিত।
গমের লক্ষ্মী, ধানের লক্ষী, শস্য লক্ষ্মী ট্যাক্‌‍শ
উৎপন্ন যত কম হোক, আমি একটারে করি এক শ’।
ট্যাক্শে রয়েছে সকল ধর্ম সকল যুগাবতার
ট্যাক্‌শ-খাজনা বিশ্ব-দেউল সকলের দেবতার ।
কেন চেপে ফের আয়ের ঠাকুরে মিথ্যা খাতার কংকালে ?
হাসিছে শোয়েব রাহুল পিণ্ডির নিভৃত অন্তরালে ।
সেইখানে বসি গাহিছেন তিনি ট্যাকসের সামগান
সে বাঁশীর সুরে আমাদের হুদা তুলিছে ঐকতান
বাজে ট্যাঙ্কুশের ঢোল
মহা-ট্যাক্শের মহাখাজানার আজি মহা- কল্লোল
উর্ধে হাসিছে শোয়েব
নিচে গণ-ক্রন্দন-রোল ।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত

ট্যাকশের গান গাই

দর্শক

ট্যাক্শের গান গাই —
আমার চক্ষে ট্যাক্‌শে ও করে কোন ভেদাভেদ নাই ৷
বিশ্বে যা-কিছু অনাসৃষ্টি, চির অকল্যাণকর
অর্ধেক তার আনিয়াছে ট্যাক্‌শ অর্ধেক তার কর ।
ট্যাক্শের গাই গান—
ট্যাকশের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান ।
বিশ্বে যা-কিছু স্থায়ী দেখিতেছ, যাহা কিছু টেক্‌সই
অর্ধেক তার গড়িয়াছে কর, অর্ধেক ট্যাক্‌শই ।
ট্যাক্‌শের গান গাই—
আমার চক্ষে ধনী-দরিদ্রের কোন ভেদাভেদ নাই ৷
কে তুমি ? ওঃ চাষী ? মজুর ? ফেরিয়াল ? ভিখারী ? মিন্তি অ
গম -ভূষিওলা ? চারচাকা ঠেলা ? করে যাও যাহা পার।
বন্ধু যা-খুশী হও—
পেঠে পিঠে কাঁধে কোমরে যা খুশী বোঝা ও গাট্টি বও,
কুড়মুড় ভাজা, পিঁয়াজু-ফুট কি চানাচুর বিক্রয়
যা কর বন্ধু, দিতে হবে মোরে বার আনা অক্‌ট্রয় ৷
পুরান-ধুরান ফাটা তেনা পরে লাঠি-ভর ঠক্‌ঠক্
সিমেন্ট বস্তা কাগজের ব্যাগ্ বেচে যাও যত সখ্
হাতের পয়সা ট্যাকে গুঁজিতেছ, ট্যাক, হতে কাঁছা খোল,
কিন্তু, কেন এ পণ্ডশ্রম মগজে হানিছ শূল ?
যতই চেষ্টা কর না বন্ধু, পারিবে না দিতে ফাঁকি
তুমি যদি থাক ডালে-ডালে আমি পাতায়-পাতায় থাকি ।
ট্যাক্‌শে নাই রেহাই
ট্যাক্‌শ কার বেহাই ?
মুনসী পাল সে শ্বশুর বাড়ি সকলে ঘর জামাই
একা সে টানিছে হাল, সকলে খাইছে পর-কামাই ।
ট্যাকশের গাই গান—
যত সেস, টল, টিপ, বখশিশ সব হ্যায় মেরা ভাই ।
‘আর্বান’ আর ‘ওয়াটার’, ‘মেথর’ এরাও নহেক পর,
সকলের মাঝে প্রকাশ তার এ-উহার নির্ভর ।
ট্যাক্শের গাই গান—
আমার চক্ষে জাতি ও বিজাতি নাহি কোন ব্যবধান ।
ট্যাক্‌শে পিষিছে, হিন্দু-বৌদ্ধ মুসলিম খৃশ্চান ৷
নাহি দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ অভেদ ধর্ম-জাতি
সর্বকাজে ট্যাক্‌শ পাতিছে মানবে-দানবে জ্ঞাতি ৷
নেংটি নিঙাড়ি রস-নির্যাস দারিদ্র্য সুমহান ।
ট্যাক্‌শ সাধিছে উচ্চতা আর নীচতার সমাধান ।
ট্যাক্শ হৃদয়হীন ?
ট্যাকশ বিহনে উন্নতি কেউ করিয়াছে কোন দিন ?
নাহক নিন্দ ভাই
ট্যাক শের মতো মহাকালজয়ী দরদী বন্ধু নাই ।
এই ট্যাকশের মহাগদি পরে বসিয়া টোডরমল্ল
মহামোগলের সম রাজ্যের দৃঢ় বুনিয়াদ গড়ল ৷
দিনে-দিনে যত বাড়িতেছে বোঝা ট্যাক্শের পর ট্যাক্শের
কমিতেছে তত রেশনের বোঝা দুইসের হতে একসের।
গাহি ট্যাক্শের জয়গান
নিন্দা যে করে ট্যাকশের হোক মর্দুদ শয়তান ৷
বন্ধু বলিনি ঝুট,
ট্যাক্শের পায়ে লুটাইয়া পড়ে যত তাজ-মুকুট।
ট্যাক্শের দায়ে নিলামে উঠিছে বৃন্দা-সুন্দরবন
বৃদ্ধ-গয়লা জরুর জালেম কিনিছে কলা-ভবন ।
গাহি ট্যাক্শের গান—
ট্যাক্‌শ অর্থ অর্থ ট্যাক্‌শ যেন মুড়ি-চিড়া-ধান
এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল ফলিয়াছে যত ফল
ট্যাক্‌শ দিয়াছে রূপ-রস তাহে গন্ধ সুনির্মল।
তাজমহলের পাথরে দেখেছে মমতাজ- সাজাহান
ট্যাক্‌শ-খাজনা না হইলে উহা কে করিত নির্মাণ ?
মসজিদ বল, মন্দির বল, গির্জাই বল ভাই
ট্যাক্‌শ ব্যতীত কোন বা কিছুই চালাবার কল নাই ৷
ট্যাক্শের গান গাই ।

গাহি ট্যাক্‌শের গীত
আমার চক্ষে শরৎ-গ্রীষ্ম নাহিক বর্ষা-শীত।
সকল ঋতুতে হরেক লগ্নে উদ্যত সে পীরিত।
গমের লক্ষ্মী, ধানের লক্ষী, শস্য লক্ষ্মী ট্যাক্‌‍শ
উৎপন্ন যত কম হোক, আমি একটারে করি এক শ’।
ট্যাক্শে রয়েছে সকল ধর্ম সকল যুগাবতার
ট্যাক্‌শ-খাজনা বিশ্ব-দেউল সকলের দেবতার ।
কেন চেপে ফের আয়ের ঠাকুরে মিথ্যা খাতার কংকালে ?
হাসিছে শোয়েব রাহুল পিণ্ডির নিভৃত অন্তরালে ।
সেইখানে বসি গাহিছেন তিনি ট্যাকসের সামগান
সে বাঁশীর সুরে আমাদের হুদা তুলিছে ঐকতান
বাজে ট্যাঙ্কুশের ঢোল
মহা-ট্যাক্শের মহাখাজানার আজি মহা- কল্লোল
উর্ধে হাসিছে শোয়েব
নিচে গণ-ক্রন্দন-রোল ।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত