proggapath, progga, bangla literature, bangla kobita, bangla golpo, babgla story, romantic golpo, প্রজ্ঞাপাঠ, syed ali ashraf, Asfala Safelin, আসফালা সাফেলীন, সৈয়দ আলী আশরাফ

আসফালা সাফেলীন

০ মন্তব্য দর্শক

আরতো সহ্য হয় না, হে আমার
মালেক, রহিম, ওগো রহমান,
আর তো সহ্য হয়না জীবনের
সাথে এই হিংস্র যুদ্ধ । খান্ খান্
হয়ে হাতিয়ার ভেঙে যায়, সীমান্তের
বেড়া ভেঙে ছুটে আসে রক্তচক্ষু
খবিসেরা ইয়াজুজ মাজুজের
মত অন্ধকারে পদভারে বক্ষ
কাঁপে ভূমিকম্পনের সর্বগ্রাসী
কাঁপনের মত । জখম করে আর
হাসে- তীক্ষ্ণ, ধারালো, ব্যাংগের হাসি।
রুদ্ধশ্বাস প্রাণ। অক্ষম । নিঃসাড় ।

আমাকে মিথ্যার থেকে মুক্ত কর ।
জাগ্রত কর তোমার সত্যসূর্য ।
আঘাত কর, আঘাত । প্রণয়ের
কষাঘাতে আমার মনের বীর্য
ঘোড়ার মত তীরের বেগে যাক
ছুটে, মিলাক ব্যপ্তিতে । যে আঘাতে
তারাদের বুকে জাগরুক কর
জীবনের কম্পন, আঘাতে মেঘের
বুকে ইস্পাতি বিদ্যুতের শক্তি
ঠিকরিয়ে দাও, আর ফুটাও
ফুলের বুক চূর্ণ করে ফলের
আনন্দ-আমাকেও তুমি জাগাও

সেই তীক্ষ্ণ আঘাত দিয়ে, খণ্ডিত
বিচূর্ণিত করে কয়লার কালো
মাড়িয়ে ফাটিয়ে দিয়ে বিচ্ছুরিত
কর তীব্র, আশ্চর্য হীরার আলো ।

যে শক্তি সংগুপ্ত আছে মুক্তার
মত হাদয়ের অন্ধ তলদেশে
প্রেমের জুলফিকার দিয়ে দ্বিখণ্ডিত
করে প্রকাশিত কর তার দীপ্তি ।

নাস্তি থেকে উদ্ধার কর হাস্তিতে
ইয়া হাইউ ইয়া কাইউমু ।
তাদের দেখেছি আমি, দেখেছি ঐ
আফালা সাফেলীন গোষ্ঠী- যারা
ভেসে চলে, চলে মহানগরীর
কঠিন গলিত পিচ্ পথ বেয়ে,
ভেসে চলে ভোরে বিবশ মধ্যাহ্নে
প্রদোষ-প্রচ্ছায়ে, রাত্রির বিজুলি
আলো-খচা অন্ধকারে, দেখে শুধু
নিজেদের পা আর শূন্যকে । ভাসে
সামনে পিছনে জোয়ার ভাঁটার
টানে খরকুটার মত ।

আমি কে ?

এরাই কি তারা যাদের রক্তধারা
নির্জিত তুষার-শৈত্যে জমাট বেঁধেছে ?
পাথর করেছ হাদয় ? বধির
করেছ শ্রবণ? দৃষ্টি হতে আলো
কেড়ে অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছ ?
হায় সুম্ বুকমুন উম্‌—
ইউনের দল ।

আমি কোন জন ?

তুলে লও তুমি উর্ধে, তুলে লও
আদিম, নিঃসীম নিঃসংগ নিলয়ে ।
দেখাও তোমার রূপ, অপরূপ
অরূপ রূপ, অহেতুক অনন্ত
স্বরূপ। মিলাও শূন্যে শূন্যে । মৃত
কর, সঞ্জীবিত কর। খোল, খোল,
সৃষ্টির গুণ্ঠন খোল । আকাশের
তারাখচা নীল কিংখাব,
কলমন্দ্র মুখরিত সমুদ্রের
অতন্দ্র তরঙ্গ ভংগ, শ্যামশম্প
গালিচার কোমল বিলাস আর
গৈরিক পর্বতের দৃঢ় উচ্চতা—
তোমার গুণ্ঠন শুধু, বিভেদের
পর্দা মাত্র । বিচ্ছিন্ন করেছ তাতে
তোমার আমার ঘন সৌহাদ্যকে,
জাগ্রত করেছ তীব্র প্রণয়ের
অসহ্য আকুতি । তাই মজনুন্‌
আজ আমার কয়েস। উৎকণ্ঠিত
প্রহরে প্রহরে সুতীব্র হয়েছে
ব্যর্থতার আগ্নেয় সঞ্চয় । তীক্ষ্ণ
এ অগ্নিকুণ্ডকে প্রোৎফুল্ল কর,
ইব্রাহিমি ঈমানের দাঢ়্য দাও
তুমি, প্রেমের মত্ততা ঈমানের
প্রশান্তি সঞ্চারে শান্ত কর,
কর শান্ত তুমি । সিনাইএর
সঘন চাঞ্চল্যে নয়ত চূর্ণিত
হব, ভস্ম হব তুরের মতই,
ব্যর্থ হবে আমার জীবন-সৃষ্টি ।
যে মুহূর্তে প্রেম পায় বিশ্বাসের
মধুর স্বাক্ষর তখনি শুধু এ
নিবেদন বিশ্ব মুক্ত হয় প্রাণ—
হীন মরীচিকার হৃদয়হীন
প্রেতনৃত্য থেকে, তখনি সৃষ্টির
সত্য অনুভূত হয় শিরায় শিরায় ।

আমার প্রণয় তাই ঈমানের
বলে বলীয়ান কর, হে রহিম,
হে রহমানুর রহিম । দুঃখের
দীপ্তিতে যেন অকলংক শুভ্রতা
জাগে প্রাণ-পূর্বাচলে, ক্ষতচিহ্ন
লাঞ্ছনা মনের বিদূরিত হয়
যেন ঈমানের স্নেহরসধারা
বৃষ্টিপাতে । প্রসন্ন অন্তরে যেন জাগে
ধান্যভারনম্র প্রান্তরের স্বর্ণ—
পূর্ণতার প্রশান্ত মৌনতা । যেন
আজ সুশোভিত করি গোলাপের
সুঠাম শরীর শিশিরের ক্ষণজীবী
জীবন্ত আভায়— যেন নিত্য
সাইমুম হয়ে আতঙ্ক পাণ্ডুর
শুষ্ক সাহারার সাথে বালুকার
হুহুঙ্কার স্বরে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলি ।

নাস্তি থেকে হাস্তি পথে
উদ্ধার, উদ্ধার কর ইয়া রব
ইয়া কাহ্হারু, ইয়া মুসব্বিরু
লাহুন্ আস্‌মাউল হুসনা ।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত

আসফালা সাফেলীন

দর্শক

আরতো সহ্য হয় না, হে আমার
মালেক, রহিম, ওগো রহমান,
আর তো সহ্য হয়না জীবনের
সাথে এই হিংস্র যুদ্ধ । খান্ খান্
হয়ে হাতিয়ার ভেঙে যায়, সীমান্তের
বেড়া ভেঙে ছুটে আসে রক্তচক্ষু
খবিসেরা ইয়াজুজ মাজুজের
মত অন্ধকারে পদভারে বক্ষ
কাঁপে ভূমিকম্পনের সর্বগ্রাসী
কাঁপনের মত । জখম করে আর
হাসে- তীক্ষ্ণ, ধারালো, ব্যাংগের হাসি।
রুদ্ধশ্বাস প্রাণ। অক্ষম । নিঃসাড় ।

আমাকে মিথ্যার থেকে মুক্ত কর ।
জাগ্রত কর তোমার সত্যসূর্য ।
আঘাত কর, আঘাত । প্রণয়ের
কষাঘাতে আমার মনের বীর্য
ঘোড়ার মত তীরের বেগে যাক
ছুটে, মিলাক ব্যপ্তিতে । যে আঘাতে
তারাদের বুকে জাগরুক কর
জীবনের কম্পন, আঘাতে মেঘের
বুকে ইস্পাতি বিদ্যুতের শক্তি
ঠিকরিয়ে দাও, আর ফুটাও
ফুলের বুক চূর্ণ করে ফলের
আনন্দ-আমাকেও তুমি জাগাও

সেই তীক্ষ্ণ আঘাত দিয়ে, খণ্ডিত
বিচূর্ণিত করে কয়লার কালো
মাড়িয়ে ফাটিয়ে দিয়ে বিচ্ছুরিত
কর তীব্র, আশ্চর্য হীরার আলো ।

যে শক্তি সংগুপ্ত আছে মুক্তার
মত হাদয়ের অন্ধ তলদেশে
প্রেমের জুলফিকার দিয়ে দ্বিখণ্ডিত
করে প্রকাশিত কর তার দীপ্তি ।

নাস্তি থেকে উদ্ধার কর হাস্তিতে
ইয়া হাইউ ইয়া কাইউমু ।
তাদের দেখেছি আমি, দেখেছি ঐ
আফালা সাফেলীন গোষ্ঠী- যারা
ভেসে চলে, চলে মহানগরীর
কঠিন গলিত পিচ্ পথ বেয়ে,
ভেসে চলে ভোরে বিবশ মধ্যাহ্নে
প্রদোষ-প্রচ্ছায়ে, রাত্রির বিজুলি
আলো-খচা অন্ধকারে, দেখে শুধু
নিজেদের পা আর শূন্যকে । ভাসে
সামনে পিছনে জোয়ার ভাঁটার
টানে খরকুটার মত ।

আমি কে ?

এরাই কি তারা যাদের রক্তধারা
নির্জিত তুষার-শৈত্যে জমাট বেঁধেছে ?
পাথর করেছ হাদয় ? বধির
করেছ শ্রবণ? দৃষ্টি হতে আলো
কেড়ে অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছ ?
হায় সুম্ বুকমুন উম্‌—
ইউনের দল ।

আমি কোন জন ?

তুলে লও তুমি উর্ধে, তুলে লও
আদিম, নিঃসীম নিঃসংগ নিলয়ে ।
দেখাও তোমার রূপ, অপরূপ
অরূপ রূপ, অহেতুক অনন্ত
স্বরূপ। মিলাও শূন্যে শূন্যে । মৃত
কর, সঞ্জীবিত কর। খোল, খোল,
সৃষ্টির গুণ্ঠন খোল । আকাশের
তারাখচা নীল কিংখাব,
কলমন্দ্র মুখরিত সমুদ্রের
অতন্দ্র তরঙ্গ ভংগ, শ্যামশম্প
গালিচার কোমল বিলাস আর
গৈরিক পর্বতের দৃঢ় উচ্চতা—
তোমার গুণ্ঠন শুধু, বিভেদের
পর্দা মাত্র । বিচ্ছিন্ন করেছ তাতে
তোমার আমার ঘন সৌহাদ্যকে,
জাগ্রত করেছ তীব্র প্রণয়ের
অসহ্য আকুতি । তাই মজনুন্‌
আজ আমার কয়েস। উৎকণ্ঠিত
প্রহরে প্রহরে সুতীব্র হয়েছে
ব্যর্থতার আগ্নেয় সঞ্চয় । তীক্ষ্ণ
এ অগ্নিকুণ্ডকে প্রোৎফুল্ল কর,
ইব্রাহিমি ঈমানের দাঢ়্য দাও
তুমি, প্রেমের মত্ততা ঈমানের
প্রশান্তি সঞ্চারে শান্ত কর,
কর শান্ত তুমি । সিনাইএর
সঘন চাঞ্চল্যে নয়ত চূর্ণিত
হব, ভস্ম হব তুরের মতই,
ব্যর্থ হবে আমার জীবন-সৃষ্টি ।
যে মুহূর্তে প্রেম পায় বিশ্বাসের
মধুর স্বাক্ষর তখনি শুধু এ
নিবেদন বিশ্ব মুক্ত হয় প্রাণ—
হীন মরীচিকার হৃদয়হীন
প্রেতনৃত্য থেকে, তখনি সৃষ্টির
সত্য অনুভূত হয় শিরায় শিরায় ।

আমার প্রণয় তাই ঈমানের
বলে বলীয়ান কর, হে রহিম,
হে রহমানুর রহিম । দুঃখের
দীপ্তিতে যেন অকলংক শুভ্রতা
জাগে প্রাণ-পূর্বাচলে, ক্ষতচিহ্ন
লাঞ্ছনা মনের বিদূরিত হয়
যেন ঈমানের স্নেহরসধারা
বৃষ্টিপাতে । প্রসন্ন অন্তরে যেন জাগে
ধান্যভারনম্র প্রান্তরের স্বর্ণ—
পূর্ণতার প্রশান্ত মৌনতা । যেন
আজ সুশোভিত করি গোলাপের
সুঠাম শরীর শিশিরের ক্ষণজীবী
জীবন্ত আভায়— যেন নিত্য
সাইমুম হয়ে আতঙ্ক পাণ্ডুর
শুষ্ক সাহারার সাথে বালুকার
হুহুঙ্কার স্বরে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলি ।

নাস্তি থেকে হাস্তি পথে
উদ্ধার, উদ্ধার কর ইয়া রব
ইয়া কাহ্হারু, ইয়া মুসব্বিরু
লাহুন্ আস্‌মাউল হুসনা ।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত