একাদশ :
রাজর্ষি বসু
বেতলা, পালাম, বিহার
৫/১২/৮৭
প্রীতিভাজনেষু,
আমি জানি না কী করে আপনার কাছে ক্ষমা চাইব । কাল শ্রুতির কাছ থেকে চিঠি পেয়েছি একটি । ওর চিঠিতেই আপনার সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানলাম । আপনি যে এখন একা এবং আপনার স্ত্রী যে দু-বছর আগে চলে গেছেন বিয়ের মাত্র তিন মাস পরে এ কথা জানার পর দুঃখিত হয়েছি খুব । আপনার সঙ্গে অত্যন্ত অর্বাচীনের মতোই হাসি-ঠাট্টা করেছি যে, তার জন্যে আমি নিঃশর্তে ক্ষমা চাইছি । শ্ৰুতি একথাও লিখেছে যে আপনাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে ।
আশা করি আপনার ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হবো না, বিশেষ করে অপরাধ যখন অনিচ্ছাকৃত। সত্যিই ভারী খারাপ লাগছে।
বাবা গত তিনচার দিন থেকে অনেকখানি করে হাঁটছেন । একেবারেই অন্য মানুষ হয়ে গেছেন উনি । শারীরিকভাবে । একটি টুপি এবং ডোমিনিক ল্যাপিয়েরের ‘সিটি অফ জয়’ বইটি পাঠিয়েছিলাম । পেয়েছেন কি? জানাবেন । শ্রুতির চিঠিটি পড়ে আমি এতখানিই আপসেট হয়ে পড়েছি যে এক্ষুনি আপনাকে কি লেখা উচিত এবং আদৌ কিছু লেখা উচিত কি না তা বুঝতেই পারছি না । এবং পারছি না বলেই অত্যন্ত নার্ভাস বোধ করছি। আপনি আমার এই নিরূপায় বিস্রস্ততা ক্ষমা করবেন । ভালো থাকবেন । খুবই ভালো থাকবেন সবসময় । আপনার মতো পুরুষকে দুঃখ দিতে পারে এমন সাধ্য কোনো মেয়েরই নেই । এটা আমার বিশ্বাস। আপনার সম্বন্ধে সামান্যতম জেনে এবং আপনাকে অন্ধকারে একঝলক দেখেই এই কথা বলছি । অনেককে দীর্ঘদিন কাছ থেকে জেনেও জানা হয়ে ওঠে না আবার কারো সঙ্গে স্বল্পকটি চিঠির আদান-প্রদানের মাধ্যমেও এমন এক সখ্য গড়ে ওঠে যে তা অতি নিবিড় । সম্পর্কের নানারকম হয়। জানার নানা ধরন।
মনটা ভারী খারাপ হয়ে গেল, আমি আপনার কেউই নই, কিছুই করতে পারি না আমি আপনার দুঃখর নিরসনের জন্যে তা অত্যন্ত স্থিরভাবে জেনেও ।
আপনি ভালো না থাকলে আমার ভারী খারাপ লাগবে । ভালো থাকবেন । আনন্দে থাকবেন সবসময়ে।
প্লীজ !
এবং নিরুত্তর থাকবেন না ।
ইতি আপনার শুভার্থিনী ঋতি