ভোরের আকাশে আলোর প্রথম রেখা
ধীরে ধীরে ছুঁয়ে যায় পৃথিবীর মুখ,
অতল অন্ধকার ভেঙে ফেলে নিস্তব্ধতার শিকল—
জেগে ওঠে জীবনের গভীর গান।
ঘাসের ডগায় কাঁপে শিশির বিন্দু,
সে যেন স্বর্গ থেকে ঝরে পড়া নক্ষত্র,
যা ধুলো মাখা পৃথিবীর বুকে এসে
আলোর দান করে ক্ষুদ্রতম প্রাণে।
পাখির ডানায় ভোরের রঙিন সুর—
তার ডাকে ছড়িয়ে পড়ে অদৃশ্য আনন্দ,
যেন কেউ আকাশের ওপার থেকে বলছে,
“জাগো, এ জীবন অলসতার নয়।”
আমি দাঁড়াই একা, বটগাছের তলায়,
হাওয়ার ছোঁয়ায় কেঁপে ওঠে আমার অন্তর।
মনে হয়—প্রকৃতি যেন মায়ের মতো
আমাকে আদর করে টেনে নেয় বুকে।
কত শত ব্যথা, কত অজানা দুঃখ
রাত্রির অন্ধকারে জমে থাকে হৃদয়ে।
কিন্তু ভোরের আলোয় তারা গলে যায়—
যেন স্রোতস্বিনী নদী সমুদ্রে বিলীন হয়।
পৃথিবী প্রতিদিন নতুন করে জন্ম নেয়,
মানুষের মনও পায় পুনর্জন্মের স্পর্শ।
প্রতিটি সকাল তাই এক চিরন্তন প্রতিশ্রুতি—
অন্ধকার যতই হোক, আলো একদিন আসবেই।
হে ভোর, তোর কোমল আভায় আমি খুঁজে পাই
আত্মার গভীর শান্তি,
যেখানে নেই বিভাজন, নেই ভেদাভেদ—
আছে শুধু এক অনন্ত মিলনের ডাক।
জীবন ক্ষণস্থায়ী, আমরা সবাই পথিক,
তবু প্রতিটি প্রভাত আমাদের শিখিয়ে যায়—
মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই,
শুধু আছে চিরন্তন রূপান্তর।
তাই আমি প্রতিটি ভোরে নিজেকে খুঁজে পাই,
নতুন, নির্মল, অমলিন—
যেন আজই প্রথম জন্ম নিলাম
এই বিশাল মহাবিশ্বের বুকে।