ওগো পৃথিবী,
তোমার বিস্তৃত আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করি—
আমি বিদ্রোহ করি বলেই কি আমি প্রেমিক নই?
আমার কলমের প্রতিটি শব্দে যেখানে ভালোবাসার অনুরণন,
তোমরা তা কেন বিদ্রোহের শ্লোগান বলে আখ্যা দাও?
আমি যে পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণকে ভালোবাসি,
তোমার প্রতিটি শিশুর হাসিতে আমার স্বপ্ন দেখি।
আমি বিদ্রোহ করি, কারণ আমি ভালোবাসি।
যে ভালোবাসা আমাকে বাধ্য করে প্রশ্ন করতে,
কেন তোমার মাঠে শস্য নেই?
কেন তোমার আকাশে কালো ধোঁয়া?
কেন তোমার নদীর জল বিষাক্ত?
আমার এই বিদ্রোহ, তোমার প্রতি গভীর প্রেমেরই অন্য রূপ।
আমি যখন শোষকের শিকল ছিঁড়ে ফেলার শপথ করি,
তোমরা তখন আমাকে “বিদ্রোহী” বলো!
তোমরা বুঝতে পারো না,
এই শপথে মিশে আছে আমার প্রেমিক হৃদয়ের আর্তি।
যে প্রেমিক তার ভালোবাসার বস্তুকে বিনষ্ট হতে দেখে,
তখন সে-ই তো বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
তুমি যদি সত্যিই জানতে চাও,
আমার হৃদয়ে প্রেম কত গভীর,
তবে দেখো, আমি কেনো শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়াই।
যে শিশু ক্ষুধায় কাঁদে,তার কান্না আমাকে জাগ্রত করে।
যে মাতার চোখে জল, সেই জল আমার অন্তরে বেদনার স্রোত বইয়ে দেয়।
তোমরা বলো, “এ বিদ্রোহ কেন?”
আমি বলি, “এ আমার প্রেম।”
আমাকে প্রেমহীন বলো না।
আমি প্রেমিক,
তবে আমার প্রেম শুধু কোনো এক নারীর চোখে বাঁধা নয়।
আমার প্রেম বিস্তৃত এই পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণে।
যে প্রেম আমাকে শিখিয়েছে যুদ্ধ করতে,
যে প্রেম আমাকে শিখিয়েছে রুখে দাঁড়াতে,
যেখানে সবাই মাথা নিচু করে।
তোমরা যারা প্রেমিক হওয়ার সংজ্ঞা খুঁজো,
তোমরা যারা ভালোবাসা বোঝার চেষ্টা করো,
তোমাদের বলি—
আমি বিদ্রোহ করি, কারণ আমি ভালোবাসি।
তোমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসে,
তোমাদের প্রতিটি হাসিতে আমি বাঁচতে চাই।
আমি প্রেমিক,
তবে আমার প্রেম শুধু কোনো এক হৃদয়ের সীমানায় বন্দি নয়।
আমার প্রেম অবারিত, মুক্ত, উদার।
তাই আমি বিদ্রোহ করি—
অন্যায়ের বিরুদ্ধে, শোষণের বিরুদ্ধে, ঘৃণার বিরুদ্ধে।
যদি তুমি আমার বিদ্রোহের চিহ্ন দেখে ভীত হও,
তবে শোনো, এ ভয় তোমার জন্য নয়।
এ ভয় তাদের জন্য, যারা ভালোবাসাকে হত্যা করতে চায়।
তুমি আমাকে প্রেমিক হিসেবেই জানবে,
যতদিন আমি ভালোবাসার জন্য লড়াই করি।
হে পৃথিবী,
আমাকে বিদ্রোহী বলো না,
আমাকে প্রেমিক বলো,
মনে রেখো,
আমার বিদ্রোহই আমার প্রেমের প্রকৃত পরিচয়।