বাঁশরির গান , proggapath, progga, bangla literature, bangla kobita, bangla golpo, babgla story, romantic golpo, মওলানা রুমি, Maulana Rumi, জাভেদ হুসেন, Javed Hussain, Bashorir gan

বাঁশরির গান

০ মন্তব্য ১১ দর্শক

বলছে বাঁশি নিজের গল্প তার
গাইছে সে গান বিরহ ব্যথার

ঝাড় থেকে কেটে এখানে এই দূরে
নারী ও পুরুষ কাঁদে আমারই সুরে

আমি চাই বিচ্ছেদে বিক্ষত সেই বুকে
প্রেম-বেদনার বয়ান শোনার সুখে

নিজের শিকড় থেকে ছিন্ন যে হয় তার
মিলনদিনের কথা মনে পড়ে বারবার

প্রতিটি আসরে আমি বারবার করি হাহাকার
শুভ-অশুভের গান গেয়ে যাই নির্বিচার

সকলেই নিজের মতো করে বন্ধু হলো আমার
আমার ভেতরের রহস্য খুঁজল না কেউ আর

রহস্য আমার লুকিয়ে থাকে হাহাকারে
দৃষ্টি কেবল, শ্রবণ পায় না তাহারে

শরীর থেকে প্রাণ, প্রাণ থেকে শরীর লুকোনো?
তবুও বলো প্রাণকে কেউ দেখেছ কখনো?

বাঁশির ডাক আগুন নয়, মৃদু হাওয়া শুধু
আগুন যাতে নেই সে তো নিষ্প্রাণ ধু ধু

আগুন হয়ে প্রেম বিরাজে বাঁশিতে হায়
প্রেমের স্পৃহা মিশে থাকে মদিরায়

প্রেম-বিরহীর সাথি হয়ে নিত্য বাঁশি জাগে
দীর্ণ করে মোদের হিয়া উৎসারিত রাগে

বাঁশির মতো এমন সাতারু কে দেখেছে আর
প্রেমনদী পাড়ি দেওয়ায় জুড়ি তো তার

বাঁশি শোনায় বিপদাকীর্ণ পথের কথা
প্রেমিক মজনুর দীর্ঘশ্বাস আর মর্মব্যথা

আমিও বাঁশির মতো দুইমুখী বটে
বাঁশির এক মুখ লুকোনো তার ঠোঁটে

আরেক মুখ তোমা পানে চেয়ে কান্নার রোলে
কী যে কোলাহল আকাশে জাগিয়ে তোলে

এ রহস্য দেখতে পায় দৃষ্টিমানের চোখ
সেই বোঝে সুর যার দিকে তার ঝোঁক
বাঁশির সুর যে বাজে তারই ঠোঁটে
প্রাণে প্রাণে কোলাহল তাই ওঠে

এই হুঁশের কথা বেহুঁশই জানে শুধু
শ্রবণই পায় শুধু রসনাশব্দ মধু

বাঁশির সুরে যদি ফল না হতো কোনো
জগৎ এমন মধুর হতো না জেনো

আমার বেদনায় বহু রাত দিন হয়েছে লয়
কত রাত দিন প্রাণের আগুনে তপ্ত হয়

দিন যদি যায়, বলো তাকে যেতে চলে
পবিত্র তুমি যেয়ো না যেয়ো না তা বলে

জলে যে ক্লান্ত সবাই, ক্লান্ত হয় না মীন
জলেই অন্ন জোটে তার, জলেই দীর্ঘদিন

অধম তো বোঝে না কী রূপ পূর্ণতায়
তাহলে কিসের কথা, বিদায় বিদায়

মদিরার মত্ততা আমার নেশার কাঙাল হয়ে থাকে
ঘুরছে আকাশ বন্দী হয়ে আমারই চেতনার বাঁকে

মদিরা আমাতে মত্ত, আমি মদিরায় নই
আমার জন্য সৃষ্ট শরীর, আমি শরীরের নই

সত্যকে শুনতে পায়, এমন জ্ঞান তো নেই সবার
পাখিরা কাঙাল হয়, তবু ডুমুর কি তার হয় খাবার

কয়েদ ভাঙো হে তনয়! মুক্ত তুমি হবে
সোনা-রুপায় বন্দী হয়ে আর কতকাল রবে

সমুদ্রকে পেয়ালায় ঢেলে কতটা আর পাবে
বড়জোর এক দিনের খোরাক তোমার হবে

লোভীর চোখে কলস থাকে সর্বসময় রিক্ত
ঝিনুক যদি তৃপ্ত না হয় জন্ম নেয় না মুক্তো

প্রেমে যে সর্বহারা জীর্ণ হলো বসন যার
লোভ-পাপের দোষ থেকে মুক্তি মেলে তার

আমার পাগল প্রেম আজ আমাকে মাতাবে
আমার সকল অসুখ তোমাতেই হারাবে

হে আমার অহংকার, আমার সব বেহুঁশের হুঁশ
তুমিই আমার আফলাতুন, আমার জালিনুস

মাটিকে প্রেম পৌঁছে দিল আকাশসীমায়
চেতন পেয়ে নাচে পাহাড় প্রেম-যমুনায়

তুর পাহাড় তো প্রাণ পেল প্রেমের তোড়ে
মত্ত হলো তুর, মুসা পড়ল হুঁশ হারিয়ে

মন্দ্র সপ্তকে লুকিয়ে আছে যে রহস্য অপার
উথাল হবে জগৎ যদি বলি তা একবার

এই দুই নিয়ে বাঁশরি যা বলে যায়
বয়ান করি তো জগৎ বিনাশ হয়

যদি থাকতে পারতাম প্রিয়র ঠোঁটে মিশে
পেতাম তবে বাঁশির মতো কথা বলার দিশে

প্রিয়র এক সুর হতে ছিন্ন হলো যে
শত সুর আছে তবু সুরহীন হলো সে

ঝরল যখন ফুল কুঞ্জ হলো বিরান
তা নিয়ে বুলবুল গাইবে না আর গান

ঝরল ফুল কুঞ্জ লয় হলো
কোন গোলাপে গন্ধ খুঁজি বলো?

সারা দুনিয়া প্রেমাস্পদ, প্রেমিক আবরণ
জীবন প্রেমাস্পদ হলে, প্রেমিক মৃত তখন

প্রেম করে না পরোয়া যখন কারও
সেই ডানাহীনকে করুণা করি আরও

তার ছোড়া তিরে আমার পালক-ডানা
প্রিয়র গলিতে পেয়ে যায় ঠিকানা

সামনে পেছন জানি না তো কারে কয়!
যদি প্রিয়র জ্যোতি সঙ্গে না মোর রয়

ডাইনে বাঁয়ে ওপর নিচে ছড়িয়ে জ্যোতি তাঁর
মাথায় গলিয়ে জড়িয়ে আছে, যেন মুকুট রত্নহার

প্রেম চায় প্রকাশ হোক সমস্ত কথা
আয়না যদি না বলে, কেমনে হবে তা?

আয়না কেন গল্প বলে না আর?
চেহারা যে তার কালিমায় একাকার

যদি আয়না থাকে কালিমা থেকে দূরে
তাতে খোদার জ্যোতির কিরণে থাকে ভরে

আয়নার মুখ থেকে সাফ করো মালিন্য
তারপর আলো আনো, সে আলো অনন্য

সত্যকে শ্রবণ করো, করো হৃদয়ে শ্রবণ
ছেড়ে যেন আসতে পারো মাটির বন্ধন

প্রাণকে ছাড়ো পথ যদি থাকে বিবেচনা
সেই পথে চলে পাবে আনন্দ চিরচেনা

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত

বাঁশরির গান

১১ দর্শক

বলছে বাঁশি নিজের গল্প তার
গাইছে সে গান বিরহ ব্যথার

ঝাড় থেকে কেটে এখানে এই দূরে
নারী ও পুরুষ কাঁদে আমারই সুরে

আমি চাই বিচ্ছেদে বিক্ষত সেই বুকে
প্রেম-বেদনার বয়ান শোনার সুখে

নিজের শিকড় থেকে ছিন্ন যে হয় তার
মিলনদিনের কথা মনে পড়ে বারবার

প্রতিটি আসরে আমি বারবার করি হাহাকার
শুভ-অশুভের গান গেয়ে যাই নির্বিচার

সকলেই নিজের মতো করে বন্ধু হলো আমার
আমার ভেতরের রহস্য খুঁজল না কেউ আর

রহস্য আমার লুকিয়ে থাকে হাহাকারে
দৃষ্টি কেবল, শ্রবণ পায় না তাহারে

শরীর থেকে প্রাণ, প্রাণ থেকে শরীর লুকোনো?
তবুও বলো প্রাণকে কেউ দেখেছ কখনো?

বাঁশির ডাক আগুন নয়, মৃদু হাওয়া শুধু
আগুন যাতে নেই সে তো নিষ্প্রাণ ধু ধু

আগুন হয়ে প্রেম বিরাজে বাঁশিতে হায়
প্রেমের স্পৃহা মিশে থাকে মদিরায়

প্রেম-বিরহীর সাথি হয়ে নিত্য বাঁশি জাগে
দীর্ণ করে মোদের হিয়া উৎসারিত রাগে

বাঁশির মতো এমন সাতারু কে দেখেছে আর
প্রেমনদী পাড়ি দেওয়ায় জুড়ি তো তার

বাঁশি শোনায় বিপদাকীর্ণ পথের কথা
প্রেমিক মজনুর দীর্ঘশ্বাস আর মর্মব্যথা

আমিও বাঁশির মতো দুইমুখী বটে
বাঁশির এক মুখ লুকোনো তার ঠোঁটে

আরেক মুখ তোমা পানে চেয়ে কান্নার রোলে
কী যে কোলাহল আকাশে জাগিয়ে তোলে

এ রহস্য দেখতে পায় দৃষ্টিমানের চোখ
সেই বোঝে সুর যার দিকে তার ঝোঁক
বাঁশির সুর যে বাজে তারই ঠোঁটে
প্রাণে প্রাণে কোলাহল তাই ওঠে

এই হুঁশের কথা বেহুঁশই জানে শুধু
শ্রবণই পায় শুধু রসনাশব্দ মধু

বাঁশির সুরে যদি ফল না হতো কোনো
জগৎ এমন মধুর হতো না জেনো

আমার বেদনায় বহু রাত দিন হয়েছে লয়
কত রাত দিন প্রাণের আগুনে তপ্ত হয়

দিন যদি যায়, বলো তাকে যেতে চলে
পবিত্র তুমি যেয়ো না যেয়ো না তা বলে

জলে যে ক্লান্ত সবাই, ক্লান্ত হয় না মীন
জলেই অন্ন জোটে তার, জলেই দীর্ঘদিন

অধম তো বোঝে না কী রূপ পূর্ণতায়
তাহলে কিসের কথা, বিদায় বিদায়

মদিরার মত্ততা আমার নেশার কাঙাল হয়ে থাকে
ঘুরছে আকাশ বন্দী হয়ে আমারই চেতনার বাঁকে

মদিরা আমাতে মত্ত, আমি মদিরায় নই
আমার জন্য সৃষ্ট শরীর, আমি শরীরের নই

সত্যকে শুনতে পায়, এমন জ্ঞান তো নেই সবার
পাখিরা কাঙাল হয়, তবু ডুমুর কি তার হয় খাবার

কয়েদ ভাঙো হে তনয়! মুক্ত তুমি হবে
সোনা-রুপায় বন্দী হয়ে আর কতকাল রবে

সমুদ্রকে পেয়ালায় ঢেলে কতটা আর পাবে
বড়জোর এক দিনের খোরাক তোমার হবে

লোভীর চোখে কলস থাকে সর্বসময় রিক্ত
ঝিনুক যদি তৃপ্ত না হয় জন্ম নেয় না মুক্তো

প্রেমে যে সর্বহারা জীর্ণ হলো বসন যার
লোভ-পাপের দোষ থেকে মুক্তি মেলে তার

আমার পাগল প্রেম আজ আমাকে মাতাবে
আমার সকল অসুখ তোমাতেই হারাবে

হে আমার অহংকার, আমার সব বেহুঁশের হুঁশ
তুমিই আমার আফলাতুন, আমার জালিনুস

মাটিকে প্রেম পৌঁছে দিল আকাশসীমায়
চেতন পেয়ে নাচে পাহাড় প্রেম-যমুনায়

তুর পাহাড় তো প্রাণ পেল প্রেমের তোড়ে
মত্ত হলো তুর, মুসা পড়ল হুঁশ হারিয়ে

মন্দ্র সপ্তকে লুকিয়ে আছে যে রহস্য অপার
উথাল হবে জগৎ যদি বলি তা একবার

এই দুই নিয়ে বাঁশরি যা বলে যায়
বয়ান করি তো জগৎ বিনাশ হয়

যদি থাকতে পারতাম প্রিয়র ঠোঁটে মিশে
পেতাম তবে বাঁশির মতো কথা বলার দিশে

প্রিয়র এক সুর হতে ছিন্ন হলো যে
শত সুর আছে তবু সুরহীন হলো সে

ঝরল যখন ফুল কুঞ্জ হলো বিরান
তা নিয়ে বুলবুল গাইবে না আর গান

ঝরল ফুল কুঞ্জ লয় হলো
কোন গোলাপে গন্ধ খুঁজি বলো?

সারা দুনিয়া প্রেমাস্পদ, প্রেমিক আবরণ
জীবন প্রেমাস্পদ হলে, প্রেমিক মৃত তখন

প্রেম করে না পরোয়া যখন কারও
সেই ডানাহীনকে করুণা করি আরও

তার ছোড়া তিরে আমার পালক-ডানা
প্রিয়র গলিতে পেয়ে যায় ঠিকানা

সামনে পেছন জানি না তো কারে কয়!
যদি প্রিয়র জ্যোতি সঙ্গে না মোর রয়

ডাইনে বাঁয়ে ওপর নিচে ছড়িয়ে জ্যোতি তাঁর
মাথায় গলিয়ে জড়িয়ে আছে, যেন মুকুট রত্নহার

প্রেম চায় প্রকাশ হোক সমস্ত কথা
আয়না যদি না বলে, কেমনে হবে তা?

আয়না কেন গল্প বলে না আর?
চেহারা যে তার কালিমায় একাকার

যদি আয়না থাকে কালিমা থেকে দূরে
তাতে খোদার জ্যোতির কিরণে থাকে ভরে

আয়নার মুখ থেকে সাফ করো মালিন্য
তারপর আলো আনো, সে আলো অনন্য

সত্যকে শ্রবণ করো, করো হৃদয়ে শ্রবণ
ছেড়ে যেন আসতে পারো মাটির বন্ধন

প্রাণকে ছাড়ো পথ যদি থাকে বিবেচনা
সেই পথে চলে পাবে আনন্দ চিরচেনা

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত