proggapath, progga, bangla literature, bangla kobita, bangla golpo, babgla story, romantic golpo, প্রজ্ঞাপাঠ, বাংলা সাহিত্য, কবিতা, বাংলা কবিতা, প্রজ্ঞা, গল্প, বাংলা গল্প, রহস্য গল্প, রম্য রচনা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, শিল্প-সাহিত্য, নাটক, চিঠি, পত্রোপন্যাস, patropanyas, poem, Story, golpo, bangla poem, bangla Story, Rahasya golpo, Rommo Rocona, Articles, Prabandha, Novel, Upanyas, Drama, Natok, Letter, Cithi, Art and literature, silpo-sahityo, আবুল ফজল, Abul Fazal, লেখার পণ্য-মূল্য, lekhar ponno mullo

লেখার পণ্য-মূল্য

০ মন্তব্য দর্শক

লেখা যে-কোন সভ্যতার অপরিহার্য অঙ্গ। মানুষের পক্ষে প্রাগৈতিহাসিক আদিম অ-লেখার যুগে ফিরে যাওয়া আর সম্ভব নয়। আক্ষরিক অর্থেই মানুষ এখন জ্ঞান-বৃক্ষের ফল-খাওয়া জীব। এ ফল অমৃত কিংবা বিষ যাই হোক না কেন, একদিকে এর চাষ, পরিচর্যা, অনুশীলন ও চর্চা—অন্যদিকে একে ভোগ, উপভোগ, হজম কিংবা আস্বাদন না করে মানুষের রেহাই নেই। চারদিকে এখন যে-সভ্যতা মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের অঙ্গ আর যে-সভ্যতা ভবিষ্যতের জন্য মানুষ কামনা করে, নিঃসন্দেহে তার প্রধানতম বাহন লেখা । লেখা ছাড়া সভ্যতা অকল্পনীয়, অভাব্য ।
লেখার সঙ্গে লেখকের সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন, অবিচ্ছেদ্য। লেখক ছাড়া লেখা হয় না । নীরব কবির অস্তিত্ব হয়তো কল্পনা করা যায়, কিন্তু না-লেখা লেখক কল্পনায়ও আনা যায় না । অপরিহার্য ন্যূনতম প্রাথমিক প্রস্তুতিটুকু থাকলে যিনি সত্যিকারের লেখক তিনি না লিখে থাকতে পারেন না । তিনি যে-কোন অবস্থায় লিখবেনই, নিজেকে করবেনই প্রকাশ। লেখার মানে অবশ্য ইতর বিশেষ অনিবার্য, তা না ঘটে পারে না। মহাপ্রতিভাবানরাও এ স্বাভাবিক পরিণতির হাত এড়াতে পারেন নি। মানব রচিত সব কিছুতেই গুণগত তারতম্য অনিবার্য । দীর্ঘকাল লেখার পণ্য-মূল্য স্বীকৃত না হলেও অতীতের স্থিতিশীল সমাজেও লেখকেরা পৃষ্ঠপোষিত আর প্রতিপালিত হতেন সমাজের দ্বারা। অর্থাৎ সমাজের বিত্তবান আর সচ্ছলরা সে দায়িত্ব বহন করছেন স্বেচ্ছায়। সমাজ এখন আর স্থিতিশীল নেই। সমাজ-বিবর্তন এখন অবিশ্বাস্যভাবে দ্রুত আর গতিশীল। জীবন-সংগ্রাম এখন কঠোর থেকে কঠোরতম পর্যায়ে এসে ঠেকেছে—ধর্মীয় থেকে অধর্মীয় সব কিছুই এখন পণ্য-মূল্যে বেচা-কেনা আর আদান-প্রদান প্রায় নিত্যকর্ম। দীনতম নিঃস্বের ঘরেও এখন মওলানা সাহেব বিনা পয়সায় মিলাদ পড়েন না। আমাদের এ ‘পাক ওয়াতনে’ও বিনা পয়সায় এক ফোটা মদ কিংবা এক ছিলিম গাঁজা কোথাও পাওয়া যায় না। বরং শোনা যায়, এসবের দাম এখন অনেক গুণ বেড়ে গেছে আগের তুলনায়। এসবই স্বাভাবিক, সব আপত্তিই এখানে অচল। কারণ আসলে মানুষ ‘অর্থনৈতিক জীব’—যিনি ধর্মীয় ওয়াজনসিহত করেন তিনি যেমন, তেমনি যারা গাঁজা-মদ তৈয়ারী করে বা বেচা-কেনা করে তারাও। ‘ইসলামিক রিপাবলিক’ কথাটা লেখা খুবই সোজা, কলমের একটা আঁচড়ই যথেষ্ট। কিন্তু ইসলামের বিধি-নিষেধকে রাষ্ট্রীয় আইনের আয়ত্তে নিয়ে আসা শুধু কঠিন নয়, আধুনিক রাষ্ট্রের সাধ্যাতীতও। এ কারণে যাকে ‘আদিম-পেশা’ বলা হয় যা সর্বতোভাবে ধর্ম-নিষিদ্ধ হলেও, পাকিস্তানে আজো তা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় নি। বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে এ রকম অজস্র স্ববিরোধিতার সম্মুখীন আমরা আজ। এ সবকে ডিঙিয়ে যাবার সাধ্য আমাদের কারো নেই ।
তবে আশ্চর্য এটুকু যে, এ অবস্থায়ও আমরা অনেক সময় ভুলে যাই লেখকরাও মানুষ অর্থাৎ অর্থনৈতিক মানুষ, তেল-খুন-লকড়ির ভাবনার শিকলে তারাও বাঁধা। তাই লেখার যে একটা দাম আছে বা দাম হতে পারে একথা অনেক সময় ভুলে থাকা হয়। আজকের দিনে সব কিছুরই পণ্য-মূল্য স্বীকৃত । বোধ করি এক লেখার ছাড়া । অবশ্য এটা আমার ঢালাও মন্তব্য নয়। ব্যতিক্রম সব কিছুরই আছে। অনেক পত্র-পত্রিকা এখন লেখার কিছু কিছু দাম দিয়ে থাকে। লেখার বদৌলতে যেখানে আয় বৃদ্ধি ঘটে সেখানে না দেওয়ার কোন সঙ্গত কারণ নেই। তবুও এমন অবস্থায়ও অনেকে দেন না । ছাপা বা মুদ্রণের অন্য সব প্রয়োজনীয় বস্তুর মূল্য দেওয়া সকলেই আবশ্যিক মনে করে, কিন্তু সব রকম মুদ্রণ ব্যাপারের বুনিয়াদী বস্তুটির দাম দেওয়া আজো তেমন আবশ্বিক মনে করা হয় না। লেখকের ‘অর্থনৈতিক’ অস্তিত্বটা ভুলে থাকা আমাদের দেশে প্রায় রেওয়াজে পরিণত। ‘মানপত্র’ কি ‘শুভেচ্ছা’ লেখা, বিয়ের কি একুশের ‘স্মরণিকা’য় লেখা দেওয়ার হাত থেকে বোধ করি খুব কম লেখকই রেহাই পান। প্রথম সামরিক শাসনের গোড়া থেকেই বোধ করি ‘সংকলনে’র প্রবল মৌসুমী হাওয়া বইতে শুরু করেছে ।
এখন লেখক আর বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য তা রীতিমতো এক উৎপাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে- কোন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামে ‘সংকলন’ বা ‘স্মরণিকা’ প্রকাশ করা এখন প্রায় অপরিহার্য প্রথা। আর এ সবের জন্য অকৃপণ হাতে খরচ করা হয় দেদার অর্থ—যার একটা নয়া পয়সাও লেখকের হাতে কি পাতে পড়ে না। এদিক দিয়ে চিত্রশিল্পীরা ভাগ্যবান : প্রচ্ছদ বা বর্ণ কিংবা রেখা কি বৃত্ত যা-ই এঁকে দিক না কেন, তার জন্য তাঁরা মূল্য পান। বিয়ের চিঠির উপর একটা প্রজাপতি বা একটা পাল্কী কিংবা নর-নারীর হাণ্ড শেকের একটা ছবি এঁকে দিয়েও নায্য দাম পেয়ে থাকেন তাঁরা। কিন্তু লেখকেরা বিয়ের চিঠি, শুভেচ্ছা, দীর্ঘ প্রীতি উপহার ইত্যাদি লিখে দিয়েও পান না একটা কানাকড়িও । অথচ এসব ছাই-ভস্ম মুদ্রণের বেলায় পয়সার কোন অভাব পড়ে না । শিল্পীরা তাঁদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন, এতে আমরা উৎফুল্ল । অনুরূপভাবে লেখারও পণ্য-মূল্য স্বীকৃত হোক এটাই আমাদের একমাত্র বক্তব্য। ছবি আর লেখা হাতের এপিঠ-ওপিঠ । এখানে ঈর্ষার কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। শিল্পীদের প্রতি মোটেও আমরা ঈর্ষান্বিত নই। শিল্পী থেকে দফতরি সকলেরই শ্রমের মূল্য স্বীকৃত । কিন্তু লেখকের বেলায় ব্যবহারটা সম্পূর্ণ বিপরীত । অথচ লেখা ছাড়া অভিনন্দনপত্র যেমন হওয়ার জো নেই, তেমনি ‘সংকলন’ কি ‘স্মরণিকা’রও অস্তিত্ব অকল্পনীয়। ছবি কি শিল্পীরও প্রয়োজন দেখা দেয় লেখার পরে অর্থাৎ সর্বাগ্রে লেখা চাই, অথচ সে লেখারই মূল্য অস্বীকৃত । কালি-কলম-কাগজ না হয় লেখক হওয়ার খেসারত হিসেবে দেওয়া গেল ; কিন্তু দুঃখ হয় এমন বাজে কাজে সময় নষ্ট করতে হয় বলে। এক লেখক ছাড়া কাকেও বোধ করি এমন দুঃসহ অবস্থায় পড়তে হয় না। শুনেছি বিদেশে শব্দ গুণে, মুদ্রিত কলামের ইঞ্চি মেপে সব লেখার দাম দেওয়া হয়। সে সব দেশে লেখাকে পেশা হিসেবে নেওয়া একারণেই সহজ। আমাদের দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত প্রধান প্রধান সাময়িকীগুলিও অনেক সময় লেখার দাম দেয় না, মনে করে না দেওয়া উচিত। দেশের সাময়িকীগুলি বেঁচে বর্তে বেড়ে উঠুক, প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাক, এরকম একটা উপচিকীর্ষু আশা নিয়ে এ-ও হয়তো সহ্য করা যায় কিন্তু লেখা নিয়ে যেখানে রীতিমত ব্যবসা করা হয়, সেখানেও লেখার দাম না পেলে লেখকের পক্ষে দুঃখটা সীমাতীত হয়ে ওঠে না কি ? তখন রাগ সামলানো দায় হয়ে পড়ে, প্রত্যাঘাতের একটা আদিম ইচ্ছাও হয়তো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । কিন্তু লেখকরা প্রকৃতিতে কিছুটা নির্বিরোধী বলে কপিরাইট আইন তাঁদের অনুকূলে হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা চুপ করে থাকেন অনেক সময়। আইন আদালত, আর উকিল মোক্তারের কাছে হাঁটাহাঁটি করা অনেকের স্বভাবে আর রুচিতে বাধে বলে নীরবে ক্ষতিটা সয়ে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। এ ভাবে নিজেরা ঠকে ঠকাবার বিদ্যাটা অন্যকে শেখান তাঁরা! কিন্তু ঠকা আর ঠকানো দু-ই তো অন্যায় আর নীতি-বিরুদ্ধ। লেখা নিয়ে যে-সব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে এ নীতি-বিরুদ্ধতাকেই ইদানীং তারা তাদের মূলধন করে নিয়েছে। লেখককে ঠকাতে কি ফাঁকি দিতে তাদের বিবেকে মোটেও বাধে না । এসবের জন্য মূলত আমাদের বড় বড় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলিই দায়ী । তারাই পয়লা নম্বরের আসামী। আমাদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল বোর্ড পাঠ্যপুস্তক সংস্থা ইত্যাদি নানা ধরনের সংকলন প্রকাশ করে থাকে। বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা পাঠ্য বইগুলির অধিকাংশই সংকলিত। সংকলকদের অনেকেই লেখক নন, অনেকে স্রেফ কাঁচি-কাটা করেই কর্তব্য শেষ করেন। তার জন্য তাঁরা কয়েক হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক পান এও হয়তো অসমীচীন নয় । কিন্তু আপত্তি হচ্ছে সংকলিত লেখাগুলির জন্য লেখকদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন পারিশ্রমিকই দেওয়া হয় না। এমনকি অনেক সময় লেখকের কাছ থেকে মামুলি অনুমতিটাও নেওয়া হয় না । এঁদের কাছে লেখাটা যেন এক বেওয়ারিশ মাল ।
কাগজে দেখলাম এ বছর প্রায় দেড় লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছে। এতে অনুমান করা যায়, কোন কোন সংকলন তথা পাঠ্য বই লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়তো হয়েছে । নিঃসন্দেহে মুনাফাও এসেছে সে অনুপাতে। আই. এ বি. এ.-তেও ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা লাখ না হলেও কয়েক হাজার তো বটেই । ঐ সব পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্য বইও নিশ্চয়ই সে সংখ্যানুপাতেই বিক্রি হয়ে থাকে। কাজেই এ সব সংকলন-যে লাভজনক ব্যবসাদারী, তাতে সন্দেহ থাকার কোন কারণ নেই। তবে এ ব্যবসায়ে কাঁচা মাল সরবরাহকারী লেখকরাই হন এর লভ্যাংশ থেকে ষোল আনা বঞ্চিত । অথচ এ কাঁচা মালটুকু ছাড়া বই বা বই-এর প্রকাশনা আর তা নিয়ে ব্যবসা–কোনটাই চলে না । আশ্চর্য, এ মৌল সত্যটুকু কেউই বুঝতে চান না, চান না স্বীকার করতে। ততোধিক আশ্চর্যের ব্যাপার, লেখকদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে যারা এ ব্যবসাদারী করেন, তাঁরা সবাই শিক্ষিত আর বই-পড়া মানুষ। কেউ কেউ শিক্ষা দেন এবং নিজেরা বই বানানও। এসব বিজ্ঞ সংকলকদের কাছে এ ভাবে বিনানুমতিতে আর বিনামূল্যে লেখা প্রকাশের প্রশ্ন তোলা হলে তাঁরা নাকি এমন কথাও বলে থাকেন : সংকলনে লেখা নেওয়া হয়েছে এতেই তো লেখকদের কৃতার্থ বোধ করা উচিত; তার উপর আবার দামও ! লেখা আর লেখকের প্রতি এ হচ্ছে আমাদের দেশের এক শ্রেণীর শিক্ষিত লোকের দৃষ্টিভঙ্গী ! শুনলাম, সম্প্রতি এক নাছোড়বান্দা লেখক এসব শিক্ষিত ব্যবসাদারদের কিঞ্চিং নাজেহাল করে ছেড়েছেন। প্রদেশের কোন এক বিশ্ববিদ্যালয় আর এক পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনী সংস্থাকে উকিলের নোটিশ দিয়ে তাঁর লেখা বিনানুমতিতে ছাপার জন্য মোটা খেসারত দাবী করেছেন তিনি। আইন লেখকের পক্ষে, তাই উক্ত বিশ্বব্যিালয় আর পুস্তক প্রকাশনী সংস্থা অত্যন্ত বুদ্ধিমানের মতো সুড় সুড় করে, বিনা বাক্যব্যয়ে ঐ লেখকের দাবী পূরণ করে দিয়েছেন। উকিলের চিঠিতে কাজ না হলে নিশ্চয়ই লেখক আইনের আশ্রয় নিতেন। নিলে উক্ত সংস্থা দুটি নির্ঘাত হেরে যেত। তদুপরি কথাটা রাষ্ট্র হলে অন্যান্য লেখকরাও এ নজিরের জোরে প্রত্যেকে ঐ পরিমাণ খেসারত দাবী না করে ছাড়তেন না । লাভের সব গুড় মুহূর্তে বালি হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিতো । গোপনে চুপে চুপে একজনকে তুষ্ট করেই খালাস। ‘বুদ্ধিমানের মতো’ কথাটা ব্যবহারের তাৎপর্য এখানে ।
কিন্তু বুদ্ধি আর ন্যায়নীতি তো এক কথা নয়। সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার । আমাদের শিক্ষা-সংক্রান্ত সংস্থাগুলিতেও যদি ন্যায়নীতি অনুসৃত না হয় তাহলে সমাজে ন্যায়নীতি চিরকাল আকাশকুসুম হয়েই থাকবে। এক্ষেত্রে ন্যায়নীতি সম্পূর্ণভাবে বর্জিত হয়েছে বলে যে-সব লেখক নির্বিরোধী স্বভাবের জন্য বা উকিল কি আইনের আশ্রয় নেওয়া নিজেদের রুচিতে বাধে বলে তা করেন নি, মাঝখান থেকে তাঁরাই ঠকলেন অর্থাৎ তাঁদেরই ঠকানো হলো। তাঁদের লেখার কোন দামই স্বীকৃত হলো না, কোন দামই পেলেন না তাঁরা। উকিলের চিঠির কি অঘটন-ঘটন-পটু মহিমা! মনে হচ্ছে এবার লেখকদেরও উকিল মোক্তারের মক্কেল না হয়ে উপায় নেই । যাই হোক, আমার এত কথার ইতিবৃত্ত এটুকু : সভ্য জীবন চাইলে লেখা ছাড়া আমাদের চলবে না আর লেখা চাইলে লেখার উৎপাদন-যত্ন লেখকটাকেও উপযুক্ত খোরপোষ দিয়ে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। লেখককে খোরপোষ দেওয়ার ভদ্র উপায় হচ্ছে লেখার দাম দেওয়া ।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত

লেখার পণ্য-মূল্য

দর্শক

লেখা যে-কোন সভ্যতার অপরিহার্য অঙ্গ। মানুষের পক্ষে প্রাগৈতিহাসিক আদিম অ-লেখার যুগে ফিরে যাওয়া আর সম্ভব নয়। আক্ষরিক অর্থেই মানুষ এখন জ্ঞান-বৃক্ষের ফল-খাওয়া জীব। এ ফল অমৃত কিংবা বিষ যাই হোক না কেন, একদিকে এর চাষ, পরিচর্যা, অনুশীলন ও চর্চা—অন্যদিকে একে ভোগ, উপভোগ, হজম কিংবা আস্বাদন না করে মানুষের রেহাই নেই। চারদিকে এখন যে-সভ্যতা মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের অঙ্গ আর যে-সভ্যতা ভবিষ্যতের জন্য মানুষ কামনা করে, নিঃসন্দেহে তার প্রধানতম বাহন লেখা । লেখা ছাড়া সভ্যতা অকল্পনীয়, অভাব্য ।
লেখার সঙ্গে লেখকের সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন, অবিচ্ছেদ্য। লেখক ছাড়া লেখা হয় না । নীরব কবির অস্তিত্ব হয়তো কল্পনা করা যায়, কিন্তু না-লেখা লেখক কল্পনায়ও আনা যায় না । অপরিহার্য ন্যূনতম প্রাথমিক প্রস্তুতিটুকু থাকলে যিনি সত্যিকারের লেখক তিনি না লিখে থাকতে পারেন না । তিনি যে-কোন অবস্থায় লিখবেনই, নিজেকে করবেনই প্রকাশ। লেখার মানে অবশ্য ইতর বিশেষ অনিবার্য, তা না ঘটে পারে না। মহাপ্রতিভাবানরাও এ স্বাভাবিক পরিণতির হাত এড়াতে পারেন নি। মানব রচিত সব কিছুতেই গুণগত তারতম্য অনিবার্য । দীর্ঘকাল লেখার পণ্য-মূল্য স্বীকৃত না হলেও অতীতের স্থিতিশীল সমাজেও লেখকেরা পৃষ্ঠপোষিত আর প্রতিপালিত হতেন সমাজের দ্বারা। অর্থাৎ সমাজের বিত্তবান আর সচ্ছলরা সে দায়িত্ব বহন করছেন স্বেচ্ছায়। সমাজ এখন আর স্থিতিশীল নেই। সমাজ-বিবর্তন এখন অবিশ্বাস্যভাবে দ্রুত আর গতিশীল। জীবন-সংগ্রাম এখন কঠোর থেকে কঠোরতম পর্যায়ে এসে ঠেকেছে—ধর্মীয় থেকে অধর্মীয় সব কিছুই এখন পণ্য-মূল্যে বেচা-কেনা আর আদান-প্রদান প্রায় নিত্যকর্ম। দীনতম নিঃস্বের ঘরেও এখন মওলানা সাহেব বিনা পয়সায় মিলাদ পড়েন না। আমাদের এ ‘পাক ওয়াতনে’ও বিনা পয়সায় এক ফোটা মদ কিংবা এক ছিলিম গাঁজা কোথাও পাওয়া যায় না। বরং শোনা যায়, এসবের দাম এখন অনেক গুণ বেড়ে গেছে আগের তুলনায়। এসবই স্বাভাবিক, সব আপত্তিই এখানে অচল। কারণ আসলে মানুষ ‘অর্থনৈতিক জীব’—যিনি ধর্মীয় ওয়াজনসিহত করেন তিনি যেমন, তেমনি যারা গাঁজা-মদ তৈয়ারী করে বা বেচা-কেনা করে তারাও। ‘ইসলামিক রিপাবলিক’ কথাটা লেখা খুবই সোজা, কলমের একটা আঁচড়ই যথেষ্ট। কিন্তু ইসলামের বিধি-নিষেধকে রাষ্ট্রীয় আইনের আয়ত্তে নিয়ে আসা শুধু কঠিন নয়, আধুনিক রাষ্ট্রের সাধ্যাতীতও। এ কারণে যাকে ‘আদিম-পেশা’ বলা হয় যা সর্বতোভাবে ধর্ম-নিষিদ্ধ হলেও, পাকিস্তানে আজো তা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় নি। বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে এ রকম অজস্র স্ববিরোধিতার সম্মুখীন আমরা আজ। এ সবকে ডিঙিয়ে যাবার সাধ্য আমাদের কারো নেই ।
তবে আশ্চর্য এটুকু যে, এ অবস্থায়ও আমরা অনেক সময় ভুলে যাই লেখকরাও মানুষ অর্থাৎ অর্থনৈতিক মানুষ, তেল-খুন-লকড়ির ভাবনার শিকলে তারাও বাঁধা। তাই লেখার যে একটা দাম আছে বা দাম হতে পারে একথা অনেক সময় ভুলে থাকা হয়। আজকের দিনে সব কিছুরই পণ্য-মূল্য স্বীকৃত । বোধ করি এক লেখার ছাড়া । অবশ্য এটা আমার ঢালাও মন্তব্য নয়। ব্যতিক্রম সব কিছুরই আছে। অনেক পত্র-পত্রিকা এখন লেখার কিছু কিছু দাম দিয়ে থাকে। লেখার বদৌলতে যেখানে আয় বৃদ্ধি ঘটে সেখানে না দেওয়ার কোন সঙ্গত কারণ নেই। তবুও এমন অবস্থায়ও অনেকে দেন না । ছাপা বা মুদ্রণের অন্য সব প্রয়োজনীয় বস্তুর মূল্য দেওয়া সকলেই আবশ্যিক মনে করে, কিন্তু সব রকম মুদ্রণ ব্যাপারের বুনিয়াদী বস্তুটির দাম দেওয়া আজো তেমন আবশ্বিক মনে করা হয় না। লেখকের ‘অর্থনৈতিক’ অস্তিত্বটা ভুলে থাকা আমাদের দেশে প্রায় রেওয়াজে পরিণত। ‘মানপত্র’ কি ‘শুভেচ্ছা’ লেখা, বিয়ের কি একুশের ‘স্মরণিকা’য় লেখা দেওয়ার হাত থেকে বোধ করি খুব কম লেখকই রেহাই পান। প্রথম সামরিক শাসনের গোড়া থেকেই বোধ করি ‘সংকলনে’র প্রবল মৌসুমী হাওয়া বইতে শুরু করেছে ।
এখন লেখক আর বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য তা রীতিমতো এক উৎপাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে- কোন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামে ‘সংকলন’ বা ‘স্মরণিকা’ প্রকাশ করা এখন প্রায় অপরিহার্য প্রথা। আর এ সবের জন্য অকৃপণ হাতে খরচ করা হয় দেদার অর্থ—যার একটা নয়া পয়সাও লেখকের হাতে কি পাতে পড়ে না। এদিক দিয়ে চিত্রশিল্পীরা ভাগ্যবান : প্রচ্ছদ বা বর্ণ কিংবা রেখা কি বৃত্ত যা-ই এঁকে দিক না কেন, তার জন্য তাঁরা মূল্য পান। বিয়ের চিঠির উপর একটা প্রজাপতি বা একটা পাল্কী কিংবা নর-নারীর হাণ্ড শেকের একটা ছবি এঁকে দিয়েও নায্য দাম পেয়ে থাকেন তাঁরা। কিন্তু লেখকেরা বিয়ের চিঠি, শুভেচ্ছা, দীর্ঘ প্রীতি উপহার ইত্যাদি লিখে দিয়েও পান না একটা কানাকড়িও । অথচ এসব ছাই-ভস্ম মুদ্রণের বেলায় পয়সার কোন অভাব পড়ে না । শিল্পীরা তাঁদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন, এতে আমরা উৎফুল্ল । অনুরূপভাবে লেখারও পণ্য-মূল্য স্বীকৃত হোক এটাই আমাদের একমাত্র বক্তব্য। ছবি আর লেখা হাতের এপিঠ-ওপিঠ । এখানে ঈর্ষার কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। শিল্পীদের প্রতি মোটেও আমরা ঈর্ষান্বিত নই। শিল্পী থেকে দফতরি সকলেরই শ্রমের মূল্য স্বীকৃত । কিন্তু লেখকের বেলায় ব্যবহারটা সম্পূর্ণ বিপরীত । অথচ লেখা ছাড়া অভিনন্দনপত্র যেমন হওয়ার জো নেই, তেমনি ‘সংকলন’ কি ‘স্মরণিকা’রও অস্তিত্ব অকল্পনীয়। ছবি কি শিল্পীরও প্রয়োজন দেখা দেয় লেখার পরে অর্থাৎ সর্বাগ্রে লেখা চাই, অথচ সে লেখারই মূল্য অস্বীকৃত । কালি-কলম-কাগজ না হয় লেখক হওয়ার খেসারত হিসেবে দেওয়া গেল ; কিন্তু দুঃখ হয় এমন বাজে কাজে সময় নষ্ট করতে হয় বলে। এক লেখক ছাড়া কাকেও বোধ করি এমন দুঃসহ অবস্থায় পড়তে হয় না। শুনেছি বিদেশে শব্দ গুণে, মুদ্রিত কলামের ইঞ্চি মেপে সব লেখার দাম দেওয়া হয়। সে সব দেশে লেখাকে পেশা হিসেবে নেওয়া একারণেই সহজ। আমাদের দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত প্রধান প্রধান সাময়িকীগুলিও অনেক সময় লেখার দাম দেয় না, মনে করে না দেওয়া উচিত। দেশের সাময়িকীগুলি বেঁচে বর্তে বেড়ে উঠুক, প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাক, এরকম একটা উপচিকীর্ষু আশা নিয়ে এ-ও হয়তো সহ্য করা যায় কিন্তু লেখা নিয়ে যেখানে রীতিমত ব্যবসা করা হয়, সেখানেও লেখার দাম না পেলে লেখকের পক্ষে দুঃখটা সীমাতীত হয়ে ওঠে না কি ? তখন রাগ সামলানো দায় হয়ে পড়ে, প্রত্যাঘাতের একটা আদিম ইচ্ছাও হয়তো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । কিন্তু লেখকরা প্রকৃতিতে কিছুটা নির্বিরোধী বলে কপিরাইট আইন তাঁদের অনুকূলে হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা চুপ করে থাকেন অনেক সময়। আইন আদালত, আর উকিল মোক্তারের কাছে হাঁটাহাঁটি করা অনেকের স্বভাবে আর রুচিতে বাধে বলে নীরবে ক্ষতিটা সয়ে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। এ ভাবে নিজেরা ঠকে ঠকাবার বিদ্যাটা অন্যকে শেখান তাঁরা! কিন্তু ঠকা আর ঠকানো দু-ই তো অন্যায় আর নীতি-বিরুদ্ধ। লেখা নিয়ে যে-সব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে এ নীতি-বিরুদ্ধতাকেই ইদানীং তারা তাদের মূলধন করে নিয়েছে। লেখককে ঠকাতে কি ফাঁকি দিতে তাদের বিবেকে মোটেও বাধে না । এসবের জন্য মূলত আমাদের বড় বড় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলিই দায়ী । তারাই পয়লা নম্বরের আসামী। আমাদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল বোর্ড পাঠ্যপুস্তক সংস্থা ইত্যাদি নানা ধরনের সংকলন প্রকাশ করে থাকে। বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা পাঠ্য বইগুলির অধিকাংশই সংকলিত। সংকলকদের অনেকেই লেখক নন, অনেকে স্রেফ কাঁচি-কাটা করেই কর্তব্য শেষ করেন। তার জন্য তাঁরা কয়েক হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক পান এও হয়তো অসমীচীন নয় । কিন্তু আপত্তি হচ্ছে সংকলিত লেখাগুলির জন্য লেখকদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন পারিশ্রমিকই দেওয়া হয় না। এমনকি অনেক সময় লেখকের কাছ থেকে মামুলি অনুমতিটাও নেওয়া হয় না । এঁদের কাছে লেখাটা যেন এক বেওয়ারিশ মাল ।
কাগজে দেখলাম এ বছর প্রায় দেড় লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছে। এতে অনুমান করা যায়, কোন কোন সংকলন তথা পাঠ্য বই লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়তো হয়েছে । নিঃসন্দেহে মুনাফাও এসেছে সে অনুপাতে। আই. এ বি. এ.-তেও ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা লাখ না হলেও কয়েক হাজার তো বটেই । ঐ সব পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্য বইও নিশ্চয়ই সে সংখ্যানুপাতেই বিক্রি হয়ে থাকে। কাজেই এ সব সংকলন-যে লাভজনক ব্যবসাদারী, তাতে সন্দেহ থাকার কোন কারণ নেই। তবে এ ব্যবসায়ে কাঁচা মাল সরবরাহকারী লেখকরাই হন এর লভ্যাংশ থেকে ষোল আনা বঞ্চিত । অথচ এ কাঁচা মালটুকু ছাড়া বই বা বই-এর প্রকাশনা আর তা নিয়ে ব্যবসা–কোনটাই চলে না । আশ্চর্য, এ মৌল সত্যটুকু কেউই বুঝতে চান না, চান না স্বীকার করতে। ততোধিক আশ্চর্যের ব্যাপার, লেখকদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে যারা এ ব্যবসাদারী করেন, তাঁরা সবাই শিক্ষিত আর বই-পড়া মানুষ। কেউ কেউ শিক্ষা দেন এবং নিজেরা বই বানানও। এসব বিজ্ঞ সংকলকদের কাছে এ ভাবে বিনানুমতিতে আর বিনামূল্যে লেখা প্রকাশের প্রশ্ন তোলা হলে তাঁরা নাকি এমন কথাও বলে থাকেন : সংকলনে লেখা নেওয়া হয়েছে এতেই তো লেখকদের কৃতার্থ বোধ করা উচিত; তার উপর আবার দামও ! লেখা আর লেখকের প্রতি এ হচ্ছে আমাদের দেশের এক শ্রেণীর শিক্ষিত লোকের দৃষ্টিভঙ্গী ! শুনলাম, সম্প্রতি এক নাছোড়বান্দা লেখক এসব শিক্ষিত ব্যবসাদারদের কিঞ্চিং নাজেহাল করে ছেড়েছেন। প্রদেশের কোন এক বিশ্ববিদ্যালয় আর এক পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনী সংস্থাকে উকিলের নোটিশ দিয়ে তাঁর লেখা বিনানুমতিতে ছাপার জন্য মোটা খেসারত দাবী করেছেন তিনি। আইন লেখকের পক্ষে, তাই উক্ত বিশ্বব্যিালয় আর পুস্তক প্রকাশনী সংস্থা অত্যন্ত বুদ্ধিমানের মতো সুড় সুড় করে, বিনা বাক্যব্যয়ে ঐ লেখকের দাবী পূরণ করে দিয়েছেন। উকিলের চিঠিতে কাজ না হলে নিশ্চয়ই লেখক আইনের আশ্রয় নিতেন। নিলে উক্ত সংস্থা দুটি নির্ঘাত হেরে যেত। তদুপরি কথাটা রাষ্ট্র হলে অন্যান্য লেখকরাও এ নজিরের জোরে প্রত্যেকে ঐ পরিমাণ খেসারত দাবী না করে ছাড়তেন না । লাভের সব গুড় মুহূর্তে বালি হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিতো । গোপনে চুপে চুপে একজনকে তুষ্ট করেই খালাস। ‘বুদ্ধিমানের মতো’ কথাটা ব্যবহারের তাৎপর্য এখানে ।
কিন্তু বুদ্ধি আর ন্যায়নীতি তো এক কথা নয়। সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার । আমাদের শিক্ষা-সংক্রান্ত সংস্থাগুলিতেও যদি ন্যায়নীতি অনুসৃত না হয় তাহলে সমাজে ন্যায়নীতি চিরকাল আকাশকুসুম হয়েই থাকবে। এক্ষেত্রে ন্যায়নীতি সম্পূর্ণভাবে বর্জিত হয়েছে বলে যে-সব লেখক নির্বিরোধী স্বভাবের জন্য বা উকিল কি আইনের আশ্রয় নেওয়া নিজেদের রুচিতে বাধে বলে তা করেন নি, মাঝখান থেকে তাঁরাই ঠকলেন অর্থাৎ তাঁদেরই ঠকানো হলো। তাঁদের লেখার কোন দামই স্বীকৃত হলো না, কোন দামই পেলেন না তাঁরা। উকিলের চিঠির কি অঘটন-ঘটন-পটু মহিমা! মনে হচ্ছে এবার লেখকদেরও উকিল মোক্তারের মক্কেল না হয়ে উপায় নেই । যাই হোক, আমার এত কথার ইতিবৃত্ত এটুকু : সভ্য জীবন চাইলে লেখা ছাড়া আমাদের চলবে না আর লেখা চাইলে লেখার উৎপাদন-যত্ন লেখকটাকেও উপযুক্ত খোরপোষ দিয়ে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। লেখককে খোরপোষ দেওয়ার ভদ্র উপায় হচ্ছে লেখার দাম দেওয়া ।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত