Shala, শালা, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, principle ibrahim kha, proggapath, progga, bangla literature, babgla story, romantic golpo, প্রজ্ঞাপাঠ, Silpo, bangla golpo, প্রজ্ঞাপাঠ, প্রজ্ঞা, গল্প, বাংলা গল্প, রম্য রচনা,

শালা

০ মন্তব্য দর্শক

শ্রোতা বন্ধুদের কেউ রাগ করবেন না, কথাটা আপনাদের বলি নাই ; এটি হচ্ছে আমার এ রচনার নাম।
বাস্তবিক সভায় দাঁড়িয়ে সমবেত এক ঝাঁক সম্ভ্রান্ত মানবকে অকস্মাৎ অমন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় করে নেওয়ার যে দুঃসাহস, সে আমার নাই ।
আমি পাকিস্তানের একজন নিরীহ নাগরিক। আমার মাত্র একটি শালা ; আর তার জ্বালাতেই আমি অস্থির। সুতরাং এতদুপরি শালা সংগ্রহের জন্য আমার আর খাহেশ নাই।
এখানে গিন্নী সমাজে যাঁরা তশরীফ এনেছেন, তাঁদের দরবারে আমার সানুনয় আবেদন, তাঁরা যেন আমার এ মন্তব্যটা মদীয় গিন্নীর কান পর্যন্ত না পৌঁছান। পৌঁছালে, বোঝেনই তো…। এ কিন্তু আমাদের গোপন ঘরোয়া ব্যাপার; সভার বাকী কেউ এ কথার পানে কান দিবেন না।
আসল কথা কি জানেন? শালা হওয়ায় লাভ ; শালা বানিয়ে লাভ নাই। আমার শালা আমার বাড়ী এসে যে কয়দিন বিরাজ করেন; চুপি চুপি বলি—সে কয়দিন আমি কেবল ইয়া নাফছি, ইয়া নাফছি করি।
পাশাপাশি খেতে বসি। দেখি চিতলের পেটী, রোয়ের মাথা, বোয়ালের পিছ—এ সব পথ ভুলে একে একে কেবল শালার বাসনের কিনারে গিয়ে নোঙর করছে। দুধ আসে আলাদা আলাদা—দুই পেয়ালায়। এক পেয়ালায় আনলে কি জানি ঢেলে দেওয়ার সময় যদি সরটা হঠাৎ আমার বাসনে পড়ে যায় !
শুনেছি আপনাদের মধ্যে কারো কারো বাবুর্চীখানা হতে মাঝে মাঝে ঢাকা হাঁড়ির মধ্য থেকে দুধের সর পাখা মেলে উড়ে যায়। মামেলাটা আপনারা টের পান। খুশীর গোস্সায় পেট ফুলতে থাকে। তবু মুখে হাসি টেনে এনে গিন্নীর পানে চেয়ে বলেন : ‘বিলাইটা ভারী দুষ্ট’।
এ তো হল অদেখা আপন বিলাইর উপর রাগ। আর আমার চোখের সামনে আমার পরম আপন-পর আত্মীয়টি যখন ঐ জিভে পানি আনা পদার্থগুলি একে একে বা–আরাম ধ্বংস করতে থাকেন, তখন আমার দিলের হালত কি হয় রসিক সুজন তা অনায়াসে অনুধাবন করতে পারেন। তবু জোর করে হাসি। গিন্নির পানে চেয়ে বলি, ‘ও হ! আমার আজকে বাজারে যাওয়া বিলকুল সার্থক। বাস্তবিক মাছ আর দুধের গাইয়ের যদি আখেরাত থেকে থাকে তবে এ ছওয়াবের জন্য ওরা বেশক বেহেস্তে যাবে।’
শুনে গিন্নী মৃদু হাসেন। কিন্তু আমার ভাই সাবের হাসবার অবকাশ নাই ; তিনি তাঁর আপন কাজে একান্তভাবে মশগুল।
ভাগ্যিস আমিও একজনের শালা ; নইলে শালা সম্প্রদায়ের উপর হতে আমার ঈমান একদম গায়েব হয়ে যেত!
বোনের বাড়ী গিয়ে আমি শালাও আমার শালার মত বেদরেগ খাওয়া শুরু করে দেই! বেচারা বোনাই! চিতলের পিঠ আর আইড়ের কাল্লা কামড়িয়ে হয়রান। আমার দিলে হামদর্দীর উদ্রেক হতে চায়, কিন্তু আমি সে দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দেই না। মনে মনে বলি, ‘তুমি বাবা যে বাড়ীর শালা পার তো সেইখানে গিয়ে এর প্রতিশোধ নেও।’
বাস্তবিক নিজে শালা না হলে শালা হওয়ার যে কি মরতবা তা সম্যক উপলব্ধি করা যায় না। আজ আমি শালা হওয়ার শুকরীয়া আদায়ের ভাষা খুঁজে পাই না।
শালা !
ছোট্ট একটি শব্দ, মাত্র ছোট্ট দু’টি হরফে গড়া। বানান হ্যাঙ্গাম বিবর্জিত। ষত্ন ণত্বের প্রশ্ন উঠে না। সন্ধির গ্রন্থি বিভ্রাট নাই। হ্রস্বই-কার দীর্ঘই-কারের মামেলা নাই। হ্রস্ব উ-কার দীর্ঘ ঊ-কারের কসরত নাই। অ-কার নাই যে উচ্চারণ করতে গিয়ে মুখকে চুঙ্গা বানাতে হবে। অনায়াসে হা করলে যে আওয়াজটা তেলের মত অক্লেশে বেরিয়ে আসে তাই : দুইটি আ-কার মাত্র—এক একটা হরফের ডান পাশে নিরীহ খুঁটির মত নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে।
অথচ বিশ্বভুবনে অমন একটি অদ্ভুত শব্দ কোথাও খুঁজে পেলাম না।
শালার দরজাই আলাদা। বোনের বাড়ী যেতে তার কোন দাওয়াতের বালাই নাই; বোনাই হাজী, গাজী, পীর পরহেজগার যাই হোন না কেন, তাঁর বাড়ীতে কোথাও শালার জন্য পর্দার বেড়া নাই। দেওড়ীর পাড়ে দাঁড়িয়ে গলা খাকাড় দিতে দিতে তাকে কণ্ঠায় বিষ ধরাতে হয় না, অন্দরে পা দিতে দিতেই ভাগ্নেরা ‘মামা’ ‘মামা’ বলে তার পানে ছুটে আসে। আর কোন খেশী দেখে ওরা অমন খুশী হয় না। ওরাও বুঝে ইনি যে সে ব্যক্তি নন, আপন বাপের আপন শালা। শালার সাত খুন মাফ। তার কানমলায় মানহানির মামলা চলে না। আসলে নাকি শালার কানমলা মিষ্টি, একটি খেলে আর একটি খাওয়ার জন্য দুলামিয়ার কান শুড় শুড় করতে থাকে। সময় মত শালা রান্না ঘরে গিয়ে চুলার পাড়ে বসতে পারে এবং চাকতে চাকতে ভাজা মাছের কড়াই কাবার করার তার অধিকার আছে। ইংরেজের আইনে তাদের রাজা কোন অপরাধ করতে পারে না; আমাদের আইনে আমাদের শালারা কোন অপরাধ করতে জানে না।
শালার মর্যাদা ইতিহাসেও স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে। সেকালে ছিল এক মস্ত বড় রাজা ; রাজার ছিল এক মস্ত শালা। রাজা দরবারে বসে বসে আফিং এস্তেমাল করত আর এক ধারছে প্রজাদের কাল্লা কাটার হুকুম দিয়ে যেত। শালাটি ভাল ছিল ; সে এ মজলুমদের কয়ে বলে রক্ষা করত।
সকলে বলাবলি করতে লাগল : এ শালা তো যে সে শালা নয়, এ আমাদের আশ্রয়স্থান। এ শালাকে আমাদের অমর করে রাখতে হবে।
তখন বেত্র-দণ্ড হাতে পণ্ডিত এসে বললেন—আমি ছোকরা ঠ্যাঙ্গানো ও ঘরের নাম দিলাম পাঠশালা। গিরস্ত গরু ঘরে নিতে নিতে বলল—আমি এর নাম দিলাম গোশালা। মাহুত তার অঙ্কুশ দুলিয়ে সেলাম জানিয়ে বল্ল—আমার ঐ ছোট্ট জীবটির থাকবার জায়গার নাম দিলাম হাতিশালা।
এমনিভাবে রোজ বেরোজ শালা অন্ত শব্দের বংশ বৃদ্ধি পেতে লাগল ; এর উপর কেউ জন্ম-নিরোধ আইনের প্রয়োগ করে নাই।
ডারউইন সাহেব বলে গেছেন, বিবর্তনের ফলে কোন কোন জানোয়ারের লেজ খয়ে পড়ে। আমি আগে এ কথা বিশ্বাস করতাম না; শালার বিবর্তন দেখে এখন বিশ্বাস করি।
অন্যের সাথে মিলনের ফলে কোন কোন স্থানে সত্যি শালার লেজ খসে গেছে। নমুনা— ঘোড়াশাল, উটশাল, ত্রিশাল, টাকশাল।
শালাকে আমি সাত সেলাম জানাই সে নিজ ইজ্জত বজায় রেখে চলেছে, যার তার সাথে গিয়ে মিলে নাই। তাই আমরা হাতীশালা পাই, ছাগলশালা পাই না; ঘোড়াশাল পাই, গাদাশাল পাই না। টাকশাল পাই, পাইশাল পাই না।
একদিন পাড়ার পচীর মা এসে দাবী করল, সবাই শালা নিয়ে টানাটানি করছে, একা আমি বাদ যাই কেন ? আমার ও ঘরের নাম দিলাম ঢেঁকিশালা।
আমি পটীর মায়ের এ সিদ্ধান্তকে মোবারকবাদ জানাই। কারণ জীবকূলের মধ্যে হাতী যেমন মানী জানোয়ার, আমাদের খান্দানী কল-ফুলের মধ্যেও ঢেঁকি তেমনি মানী যন্ত্র। (দেহি পদ পল্লব মুদারম’ বলে ভক্তরা কেঁদে মরে; ঢেঁকির কাঁদতে হয় না। সে অযাচিত পদ পল্লবের পরশে অষ্টক্ষ ধন্য)।
এই পুণ্যেই তো ঢেঁকি স্বর্গে যায়। তা সেখানে গিয়েও যদি সে ধান ভানে, তা ভানুক, খান্দানী পেশায় শরম কি? আমরা যদি হঠাৎ কোন ফেরেস্তার ভুলে বেহেস্তে গিয়ে পড়ি, তবে সেখানে কি করব ভাই ভাবি। সেখানে অফিস নাই যে দেরীতে যাব, চাকরি নাই যে ঘুষ খাব, অধ্যাপনার ক্লাশ নাই যে ফাঁকি দিব, রাজনীতি নাই যে অন্যের কুৎসা রটার আর এসেম্বলী নাই যে স্পীকারের মাথা ফাটাব।
ঢেঁকির কপাল ভাল ; এ সব সমস্যার কথা ভেবে তাকে চিন্তার অথৈ পাথারে হাবুডুবু খেতে হয় না।
বলাইর সাথে আমি আনন্দমোহন কলেজে আই.এ পড়তাম ; খাসা ছেলে। সব কাজে সে ওস্তাদ ছিল—একটা সামান্য বিষয় ছাড়া—পড়া। যেদিন ক্লাশে ‘বারবার’ ডেরিয়াই শুরু হল, সেদিন বিকালে
‘রেখ মা দাসেরে মনে
এ মিনতি করি পদে
আবৃত্তি করতে করতে সে প্রকৃতির পাঠশালায় বেরিয়ে গেল।
এরপর পাঁচ বছর চলে গেছে। আমি ইতিমধ্যে কয়েকটা বড় বড় পাস দিয়েছি। গাঁয় গেলে লোকে আমাকে পথ ছেড়ে দেয়; ছোকরার দলের কেউ কেউ সেলাম করতে চায় ; কন্যাদায়গ্রস্তরা ঘন ঘন খোঁজ নেয়। এ হেন একটা গুরুত্বভাজন ব্যক্তি যে আমি, সেই আমির সাথে একদা অকস্মাৎ সাক্ষাৎ লাভ ঘটল বলাই চন্দ্রের—কলকাতা হ্যারিসন রোডের উপর। পথ ভরা মানুষ। তারই মধ্যে কোন ভূমিকা না করে সে অকুণ্ঠ কণ্ঠে বলে উঠল : ‘ঐ শালা কেমন আছিস রে?’
আমার দেহময় আনন্দের রোমাঞ্চ দেখা দিল। ভাবলাম ‘ওরে ও পরম অর্টিস্ট, পারলে এই একটা বাক্যের জন্য তোকে আমি নোবেল প্রাইজ দিতাম। এ দুনিয়ায় এমন কোন আত্মীয় আছে, এইক্ষণ যার নামে আমাকে ডাকলে এত মধু ঝরত?’
তাই আমি শালা হয়ে খুশী। আমি জানি শালা ডাক শুনে কেউ কেউ রাগ করে থাকেন। কিন্তু ও তাঁদের লোক দেখান রাগ। প্রকৃতপক্ষে তাঁরা শালা হওয়ার জন্য একান্ত উদ্‌গ্রীব। তাঁরা বিরক্তি প্রকাশ করেন এই বলে যে আসল শালার তালিকায় নাম ভর্তি করবে না তো এ নকল শালা ডেকে তামাসা কর কেন ?
এঁদের কেউ কেউ নিতান্ত বাস্তব পন্থী। নিজেদের বোন নাই, সুবিধামত কারো সাথে বোন পেতে শালা হন। চিনির বদলে স্যাকারীন। মন্দের ভাল। দীনু বাবু সত্যি বলেছেন : ‘কাঠের বিড়াল হলে দোষ কি? ইন্দুর মারলেই হল।’
তাই বলে আপনারা সকলে শালা হতে চাবেন না। যাদের বয়স অকারণে তিন কুড়ির কাছে গিয়ে উঠেছে, তাদের পক্ষে শালা হতে চেষ্টা না করাই সমীচীন।
শালাদের বয়সে একটা শালা শালা ভাব থাকার দরকার। তাছাড়া, ষাট সত্তরের শালাকে দত্তক গ্রহণ করতে কোন বোনাইর সহজে রাজী হবার কথা নয়। কারণ নিজের গিন্নীকে তা হলে জহুদ বুড়ী বলে প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিতে হয়।
আমরা আমাদের গিন্নীদের বুড়ী করতে রাজী নই। তাদের মাথায় যতই কাশ ফুল ফুটুক, আমরা বলব—ওটা বাতের দোষ। তাঁদের দাঁত যদি সব কয়টিই হিজরত করে থাকে, আমরা বলব—ওটা অতিরিক্ত টক খাওয়ার ফল। তাদের হজম শক্তি যদি নেহায়েত কমেই যায়, আমরা বলব ওটা শরাফতের লক্ষণ। আর তারা যদি আবোল তাবোল বকতে শুরু করেন, তবে বলব : শিরায় রাষ্ট্রনেতার রক্ত আছে।
আমি নজরুল ইসলামের বিষম ভক্ত। তার অনুপ্রেরণায় নরনারীর সাম্যে আমার ঈমান অটল। জাতিসংঘের বিঘোষিত হিউম্যান রাইটস, ইয়ানে মানবীয় অধিকার-এর বাণী আমি হাটে মাঠে ঘাটে অহরহ প্রচার করে থাকি।
সুতরাং শালার মত শালীর প্রিভিলেজের সীমানাও যে দিগন্ত বিস্তৃত সে আমি একান্তভাবে বিশ্বাস করি।
তথাপি আমার এ গবেষণা পত্রে শালী ঘটিত ব্যাপার সম্বন্ধে আজ আমি কোন উচ্চবাচ্য করতে চাই না। কেউ ভুল বুঝবেন না; এ আমার একান্ত আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা মাত্র।
আমার এক কবি বন্ধু একদা নিশীথে কবিতা সাধন করতে করতে অকস্মাৎ ‘মালিকা’ এই শব্দটুকু নিয়ে ফাঁগড়ে পড়ে যান। অনেকক্ষণ পর্যন্ত ধ্বস্তাধ্বস্তি করার পরে মিলের শব্দ কিছু না পেয়ে অবশেষে তিনি শালিকাকে এনে তারই গলায় মালিকা পরিয়ে দেন। তারপর খাতাখানা টেবিলের উপর খোলা রেখে ক্লান্ত বিছানায় শুয়ে পড়েন।
শালিকা মালিকা ঘটিত কোন স্বপনের জন্য নয়, রাত জাগার স্বাভাবিক জড়তার জন্যই কবির ঘুম ভাঙতে দেরী হয়। ইতিমধ্যে কবি গিন্নী উঠে পড়েন। তার নজরে কবির লেখা শেষ দুটি লাইন হঠাৎ পড়ে যায়।
ওহঃ তারপর তাদের দুজনের মধ্যে যে কী জদ্দ জেহাদ ! সে মহা আহবে কে বিজয় লাভ করেন, সে কথা এ যাবত জাতিসংঘের কোন কাগজে জরুরী সংবাদ হিসেবে ছাপা হয়। নাই।
বোধ হয় কবিই জিতেন। কারণ দেখা গেল তিনি দেহ হতে পোড়া পর্দা বিশেষের কালি মুছতে মুছতে নাকে খত দিয়ে করার করেন যে অতঃপর মালিকা অনাদরে শুকিয়ে যায় যাবে, তথাপি তা কোন শালিকার গলায় তুলে দেওয়া চলবে না, নিশীথ রাতেও নয়, সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারের কাব্যময় আড়ালেও নয়।
কবির ঘরের এ বিভ্রাট অবশ্য আমি আমার ঘরে পয়দা করতে চাই না, তথাপি মহান নারী জাতির স্বার্থের খাতিরে আমাকে বলতেই হবে যে ছন্দমিলের খাতিরে এ বিভ্রাট করে কবি শালীকুলের প্রতি ভীষণ অবিচার করেছেন।
শুনেছি, শালী সংঘ তাদের গলা নিয়ে টানাটানির জন্য শিগগিরই যথাযোগ্য স্থানে নালিশ দায়ের করবেন। এদিকে গিন্নী লীগও কবিকে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ঠিকমত না চল্লে তারা অগত্যা তার দুয়ারে সত্যাগ্রহ শুরু করে দিবেন।
একদিকে শালীকুলের ভয়াল ভ্রূকুটি, অন্যদিকে গিন্নী লীগের সত্যাগ্রহের হুমকি, বিভ্রান্ত কবি অবশেষে অসীম সাহসে পেছন দরজা দিয়ে গৃহত্যাগ করে কোন অজানা স্থানে পালিয়ে গেছেন।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত

শালা

দর্শক

শ্রোতা বন্ধুদের কেউ রাগ করবেন না, কথাটা আপনাদের বলি নাই ; এটি হচ্ছে আমার এ রচনার নাম।
বাস্তবিক সভায় দাঁড়িয়ে সমবেত এক ঝাঁক সম্ভ্রান্ত মানবকে অকস্মাৎ অমন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় করে নেওয়ার যে দুঃসাহস, সে আমার নাই ।
আমি পাকিস্তানের একজন নিরীহ নাগরিক। আমার মাত্র একটি শালা ; আর তার জ্বালাতেই আমি অস্থির। সুতরাং এতদুপরি শালা সংগ্রহের জন্য আমার আর খাহেশ নাই।
এখানে গিন্নী সমাজে যাঁরা তশরীফ এনেছেন, তাঁদের দরবারে আমার সানুনয় আবেদন, তাঁরা যেন আমার এ মন্তব্যটা মদীয় গিন্নীর কান পর্যন্ত না পৌঁছান। পৌঁছালে, বোঝেনই তো…। এ কিন্তু আমাদের গোপন ঘরোয়া ব্যাপার; সভার বাকী কেউ এ কথার পানে কান দিবেন না।
আসল কথা কি জানেন? শালা হওয়ায় লাভ ; শালা বানিয়ে লাভ নাই। আমার শালা আমার বাড়ী এসে যে কয়দিন বিরাজ করেন; চুপি চুপি বলি—সে কয়দিন আমি কেবল ইয়া নাফছি, ইয়া নাফছি করি।
পাশাপাশি খেতে বসি। দেখি চিতলের পেটী, রোয়ের মাথা, বোয়ালের পিছ—এ সব পথ ভুলে একে একে কেবল শালার বাসনের কিনারে গিয়ে নোঙর করছে। দুধ আসে আলাদা আলাদা—দুই পেয়ালায়। এক পেয়ালায় আনলে কি জানি ঢেলে দেওয়ার সময় যদি সরটা হঠাৎ আমার বাসনে পড়ে যায় !
শুনেছি আপনাদের মধ্যে কারো কারো বাবুর্চীখানা হতে মাঝে মাঝে ঢাকা হাঁড়ির মধ্য থেকে দুধের সর পাখা মেলে উড়ে যায়। মামেলাটা আপনারা টের পান। খুশীর গোস্সায় পেট ফুলতে থাকে। তবু মুখে হাসি টেনে এনে গিন্নীর পানে চেয়ে বলেন : ‘বিলাইটা ভারী দুষ্ট’।
এ তো হল অদেখা আপন বিলাইর উপর রাগ। আর আমার চোখের সামনে আমার পরম আপন-পর আত্মীয়টি যখন ঐ জিভে পানি আনা পদার্থগুলি একে একে বা–আরাম ধ্বংস করতে থাকেন, তখন আমার দিলের হালত কি হয় রসিক সুজন তা অনায়াসে অনুধাবন করতে পারেন। তবু জোর করে হাসি। গিন্নির পানে চেয়ে বলি, ‘ও হ! আমার আজকে বাজারে যাওয়া বিলকুল সার্থক। বাস্তবিক মাছ আর দুধের গাইয়ের যদি আখেরাত থেকে থাকে তবে এ ছওয়াবের জন্য ওরা বেশক বেহেস্তে যাবে।’
শুনে গিন্নী মৃদু হাসেন। কিন্তু আমার ভাই সাবের হাসবার অবকাশ নাই ; তিনি তাঁর আপন কাজে একান্তভাবে মশগুল।
ভাগ্যিস আমিও একজনের শালা ; নইলে শালা সম্প্রদায়ের উপর হতে আমার ঈমান একদম গায়েব হয়ে যেত!
বোনের বাড়ী গিয়ে আমি শালাও আমার শালার মত বেদরেগ খাওয়া শুরু করে দেই! বেচারা বোনাই! চিতলের পিঠ আর আইড়ের কাল্লা কামড়িয়ে হয়রান। আমার দিলে হামদর্দীর উদ্রেক হতে চায়, কিন্তু আমি সে দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দেই না। মনে মনে বলি, ‘তুমি বাবা যে বাড়ীর শালা পার তো সেইখানে গিয়ে এর প্রতিশোধ নেও।’
বাস্তবিক নিজে শালা না হলে শালা হওয়ার যে কি মরতবা তা সম্যক উপলব্ধি করা যায় না। আজ আমি শালা হওয়ার শুকরীয়া আদায়ের ভাষা খুঁজে পাই না।
শালা !
ছোট্ট একটি শব্দ, মাত্র ছোট্ট দু’টি হরফে গড়া। বানান হ্যাঙ্গাম বিবর্জিত। ষত্ন ণত্বের প্রশ্ন উঠে না। সন্ধির গ্রন্থি বিভ্রাট নাই। হ্রস্বই-কার দীর্ঘই-কারের মামেলা নাই। হ্রস্ব উ-কার দীর্ঘ ঊ-কারের কসরত নাই। অ-কার নাই যে উচ্চারণ করতে গিয়ে মুখকে চুঙ্গা বানাতে হবে। অনায়াসে হা করলে যে আওয়াজটা তেলের মত অক্লেশে বেরিয়ে আসে তাই : দুইটি আ-কার মাত্র—এক একটা হরফের ডান পাশে নিরীহ খুঁটির মত নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে।
অথচ বিশ্বভুবনে অমন একটি অদ্ভুত শব্দ কোথাও খুঁজে পেলাম না।
শালার দরজাই আলাদা। বোনের বাড়ী যেতে তার কোন দাওয়াতের বালাই নাই; বোনাই হাজী, গাজী, পীর পরহেজগার যাই হোন না কেন, তাঁর বাড়ীতে কোথাও শালার জন্য পর্দার বেড়া নাই। দেওড়ীর পাড়ে দাঁড়িয়ে গলা খাকাড় দিতে দিতে তাকে কণ্ঠায় বিষ ধরাতে হয় না, অন্দরে পা দিতে দিতেই ভাগ্নেরা ‘মামা’ ‘মামা’ বলে তার পানে ছুটে আসে। আর কোন খেশী দেখে ওরা অমন খুশী হয় না। ওরাও বুঝে ইনি যে সে ব্যক্তি নন, আপন বাপের আপন শালা। শালার সাত খুন মাফ। তার কানমলায় মানহানির মামলা চলে না। আসলে নাকি শালার কানমলা মিষ্টি, একটি খেলে আর একটি খাওয়ার জন্য দুলামিয়ার কান শুড় শুড় করতে থাকে। সময় মত শালা রান্না ঘরে গিয়ে চুলার পাড়ে বসতে পারে এবং চাকতে চাকতে ভাজা মাছের কড়াই কাবার করার তার অধিকার আছে। ইংরেজের আইনে তাদের রাজা কোন অপরাধ করতে পারে না; আমাদের আইনে আমাদের শালারা কোন অপরাধ করতে জানে না।
শালার মর্যাদা ইতিহাসেও স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে। সেকালে ছিল এক মস্ত বড় রাজা ; রাজার ছিল এক মস্ত শালা। রাজা দরবারে বসে বসে আফিং এস্তেমাল করত আর এক ধারছে প্রজাদের কাল্লা কাটার হুকুম দিয়ে যেত। শালাটি ভাল ছিল ; সে এ মজলুমদের কয়ে বলে রক্ষা করত।
সকলে বলাবলি করতে লাগল : এ শালা তো যে সে শালা নয়, এ আমাদের আশ্রয়স্থান। এ শালাকে আমাদের অমর করে রাখতে হবে।
তখন বেত্র-দণ্ড হাতে পণ্ডিত এসে বললেন—আমি ছোকরা ঠ্যাঙ্গানো ও ঘরের নাম দিলাম পাঠশালা। গিরস্ত গরু ঘরে নিতে নিতে বলল—আমি এর নাম দিলাম গোশালা। মাহুত তার অঙ্কুশ দুলিয়ে সেলাম জানিয়ে বল্ল—আমার ঐ ছোট্ট জীবটির থাকবার জায়গার নাম দিলাম হাতিশালা।
এমনিভাবে রোজ বেরোজ শালা অন্ত শব্দের বংশ বৃদ্ধি পেতে লাগল ; এর উপর কেউ জন্ম-নিরোধ আইনের প্রয়োগ করে নাই।
ডারউইন সাহেব বলে গেছেন, বিবর্তনের ফলে কোন কোন জানোয়ারের লেজ খয়ে পড়ে। আমি আগে এ কথা বিশ্বাস করতাম না; শালার বিবর্তন দেখে এখন বিশ্বাস করি।
অন্যের সাথে মিলনের ফলে কোন কোন স্থানে সত্যি শালার লেজ খসে গেছে। নমুনা— ঘোড়াশাল, উটশাল, ত্রিশাল, টাকশাল।
শালাকে আমি সাত সেলাম জানাই সে নিজ ইজ্জত বজায় রেখে চলেছে, যার তার সাথে গিয়ে মিলে নাই। তাই আমরা হাতীশালা পাই, ছাগলশালা পাই না; ঘোড়াশাল পাই, গাদাশাল পাই না। টাকশাল পাই, পাইশাল পাই না।
একদিন পাড়ার পচীর মা এসে দাবী করল, সবাই শালা নিয়ে টানাটানি করছে, একা আমি বাদ যাই কেন ? আমার ও ঘরের নাম দিলাম ঢেঁকিশালা।
আমি পটীর মায়ের এ সিদ্ধান্তকে মোবারকবাদ জানাই। কারণ জীবকূলের মধ্যে হাতী যেমন মানী জানোয়ার, আমাদের খান্দানী কল-ফুলের মধ্যেও ঢেঁকি তেমনি মানী যন্ত্র। (দেহি পদ পল্লব মুদারম’ বলে ভক্তরা কেঁদে মরে; ঢেঁকির কাঁদতে হয় না। সে অযাচিত পদ পল্লবের পরশে অষ্টক্ষ ধন্য)।
এই পুণ্যেই তো ঢেঁকি স্বর্গে যায়। তা সেখানে গিয়েও যদি সে ধান ভানে, তা ভানুক, খান্দানী পেশায় শরম কি? আমরা যদি হঠাৎ কোন ফেরেস্তার ভুলে বেহেস্তে গিয়ে পড়ি, তবে সেখানে কি করব ভাই ভাবি। সেখানে অফিস নাই যে দেরীতে যাব, চাকরি নাই যে ঘুষ খাব, অধ্যাপনার ক্লাশ নাই যে ফাঁকি দিব, রাজনীতি নাই যে অন্যের কুৎসা রটার আর এসেম্বলী নাই যে স্পীকারের মাথা ফাটাব।
ঢেঁকির কপাল ভাল ; এ সব সমস্যার কথা ভেবে তাকে চিন্তার অথৈ পাথারে হাবুডুবু খেতে হয় না।
বলাইর সাথে আমি আনন্দমোহন কলেজে আই.এ পড়তাম ; খাসা ছেলে। সব কাজে সে ওস্তাদ ছিল—একটা সামান্য বিষয় ছাড়া—পড়া। যেদিন ক্লাশে ‘বারবার’ ডেরিয়াই শুরু হল, সেদিন বিকালে
‘রেখ মা দাসেরে মনে
এ মিনতি করি পদে
আবৃত্তি করতে করতে সে প্রকৃতির পাঠশালায় বেরিয়ে গেল।
এরপর পাঁচ বছর চলে গেছে। আমি ইতিমধ্যে কয়েকটা বড় বড় পাস দিয়েছি। গাঁয় গেলে লোকে আমাকে পথ ছেড়ে দেয়; ছোকরার দলের কেউ কেউ সেলাম করতে চায় ; কন্যাদায়গ্রস্তরা ঘন ঘন খোঁজ নেয়। এ হেন একটা গুরুত্বভাজন ব্যক্তি যে আমি, সেই আমির সাথে একদা অকস্মাৎ সাক্ষাৎ লাভ ঘটল বলাই চন্দ্রের—কলকাতা হ্যারিসন রোডের উপর। পথ ভরা মানুষ। তারই মধ্যে কোন ভূমিকা না করে সে অকুণ্ঠ কণ্ঠে বলে উঠল : ‘ঐ শালা কেমন আছিস রে?’
আমার দেহময় আনন্দের রোমাঞ্চ দেখা দিল। ভাবলাম ‘ওরে ও পরম অর্টিস্ট, পারলে এই একটা বাক্যের জন্য তোকে আমি নোবেল প্রাইজ দিতাম। এ দুনিয়ায় এমন কোন আত্মীয় আছে, এইক্ষণ যার নামে আমাকে ডাকলে এত মধু ঝরত?’
তাই আমি শালা হয়ে খুশী। আমি জানি শালা ডাক শুনে কেউ কেউ রাগ করে থাকেন। কিন্তু ও তাঁদের লোক দেখান রাগ। প্রকৃতপক্ষে তাঁরা শালা হওয়ার জন্য একান্ত উদ্‌গ্রীব। তাঁরা বিরক্তি প্রকাশ করেন এই বলে যে আসল শালার তালিকায় নাম ভর্তি করবে না তো এ নকল শালা ডেকে তামাসা কর কেন ?
এঁদের কেউ কেউ নিতান্ত বাস্তব পন্থী। নিজেদের বোন নাই, সুবিধামত কারো সাথে বোন পেতে শালা হন। চিনির বদলে স্যাকারীন। মন্দের ভাল। দীনু বাবু সত্যি বলেছেন : ‘কাঠের বিড়াল হলে দোষ কি? ইন্দুর মারলেই হল।’
তাই বলে আপনারা সকলে শালা হতে চাবেন না। যাদের বয়স অকারণে তিন কুড়ির কাছে গিয়ে উঠেছে, তাদের পক্ষে শালা হতে চেষ্টা না করাই সমীচীন।
শালাদের বয়সে একটা শালা শালা ভাব থাকার দরকার। তাছাড়া, ষাট সত্তরের শালাকে দত্তক গ্রহণ করতে কোন বোনাইর সহজে রাজী হবার কথা নয়। কারণ নিজের গিন্নীকে তা হলে জহুদ বুড়ী বলে প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিতে হয়।
আমরা আমাদের গিন্নীদের বুড়ী করতে রাজী নই। তাদের মাথায় যতই কাশ ফুল ফুটুক, আমরা বলব—ওটা বাতের দোষ। তাঁদের দাঁত যদি সব কয়টিই হিজরত করে থাকে, আমরা বলব—ওটা অতিরিক্ত টক খাওয়ার ফল। তাদের হজম শক্তি যদি নেহায়েত কমেই যায়, আমরা বলব ওটা শরাফতের লক্ষণ। আর তারা যদি আবোল তাবোল বকতে শুরু করেন, তবে বলব : শিরায় রাষ্ট্রনেতার রক্ত আছে।
আমি নজরুল ইসলামের বিষম ভক্ত। তার অনুপ্রেরণায় নরনারীর সাম্যে আমার ঈমান অটল। জাতিসংঘের বিঘোষিত হিউম্যান রাইটস, ইয়ানে মানবীয় অধিকার-এর বাণী আমি হাটে মাঠে ঘাটে অহরহ প্রচার করে থাকি।
সুতরাং শালার মত শালীর প্রিভিলেজের সীমানাও যে দিগন্ত বিস্তৃত সে আমি একান্তভাবে বিশ্বাস করি।
তথাপি আমার এ গবেষণা পত্রে শালী ঘটিত ব্যাপার সম্বন্ধে আজ আমি কোন উচ্চবাচ্য করতে চাই না। কেউ ভুল বুঝবেন না; এ আমার একান্ত আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা মাত্র।
আমার এক কবি বন্ধু একদা নিশীথে কবিতা সাধন করতে করতে অকস্মাৎ ‘মালিকা’ এই শব্দটুকু নিয়ে ফাঁগড়ে পড়ে যান। অনেকক্ষণ পর্যন্ত ধ্বস্তাধ্বস্তি করার পরে মিলের শব্দ কিছু না পেয়ে অবশেষে তিনি শালিকাকে এনে তারই গলায় মালিকা পরিয়ে দেন। তারপর খাতাখানা টেবিলের উপর খোলা রেখে ক্লান্ত বিছানায় শুয়ে পড়েন।
শালিকা মালিকা ঘটিত কোন স্বপনের জন্য নয়, রাত জাগার স্বাভাবিক জড়তার জন্যই কবির ঘুম ভাঙতে দেরী হয়। ইতিমধ্যে কবি গিন্নী উঠে পড়েন। তার নজরে কবির লেখা শেষ দুটি লাইন হঠাৎ পড়ে যায়।
ওহঃ তারপর তাদের দুজনের মধ্যে যে কী জদ্দ জেহাদ ! সে মহা আহবে কে বিজয় লাভ করেন, সে কথা এ যাবত জাতিসংঘের কোন কাগজে জরুরী সংবাদ হিসেবে ছাপা হয়। নাই।
বোধ হয় কবিই জিতেন। কারণ দেখা গেল তিনি দেহ হতে পোড়া পর্দা বিশেষের কালি মুছতে মুছতে নাকে খত দিয়ে করার করেন যে অতঃপর মালিকা অনাদরে শুকিয়ে যায় যাবে, তথাপি তা কোন শালিকার গলায় তুলে দেওয়া চলবে না, নিশীথ রাতেও নয়, সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারের কাব্যময় আড়ালেও নয়।
কবির ঘরের এ বিভ্রাট অবশ্য আমি আমার ঘরে পয়দা করতে চাই না, তথাপি মহান নারী জাতির স্বার্থের খাতিরে আমাকে বলতেই হবে যে ছন্দমিলের খাতিরে এ বিভ্রাট করে কবি শালীকুলের প্রতি ভীষণ অবিচার করেছেন।
শুনেছি, শালী সংঘ তাদের গলা নিয়ে টানাটানির জন্য শিগগিরই যথাযোগ্য স্থানে নালিশ দায়ের করবেন। এদিকে গিন্নী লীগও কবিকে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ঠিকমত না চল্লে তারা অগত্যা তার দুয়ারে সত্যাগ্রহ শুরু করে দিবেন।
একদিকে শালীকুলের ভয়াল ভ্রূকুটি, অন্যদিকে গিন্নী লীগের সত্যাগ্রহের হুমকি, বিভ্রান্ত কবি অবশেষে অসীম সাহসে পেছন দরজা দিয়ে গৃহত্যাগ করে কোন অজানা স্থানে পালিয়ে গেছেন।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত