proggapath, progga, bangla literature, bangla kobita, bangla golpo, babgla story, romantic golpo, প্রজ্ঞাপাঠ, বাংলা সাহিত্য, কবিতা, বাংলা কবিতা, প্রজ্ঞা, গল্প, বাংলা গল্প, রহস্য গল্প, রম্য রচনা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, শিল্প-সাহিত্য, নাটক, চিঠি, poem, Story, golpo, bangla poem, bangla Story, Rahasya golpo, Rommo Rocona, Articles, Prabandha, Novel, Upanyas, Drama, Natok, Letter, Cithi, Art and literature, silpo-sahityo, বুদ্ধদেব গুহ, buddhadeb guha, সবিনয় নিবেদন, sobinoy nibedon, পত্রোপন্যাস, patropanyas,

সবিনয় নিবেদন

০ মন্তব্য দর্শক

ত্রয়োদশ অঙ্কন :

ঋতি রায়
কলকাতা

বেতলা
৬/১২/৮৭

কল্যাণীয়াসু,
তোমার দুখানি চিঠি একই সঙ্গে পেলাম । পেয়েছি গতকাল । গত রাতে এখানে খুব এক চোট ঝড়-বৃষ্টি হয়ে গেলো । কিন্তু সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার । কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে । ঝক্‌ঝকে রোদ । মোটা গরম পাজামা পাঞ্জাবী পরে তার ওপরে গরম-খাদির জহর কোট এবং মোটা আলোয়ান চাপিয়ে বারান্দায় বসে তোমাকে চিঠি লিখছি । আজ রবিবার । তোমার পাঠানো দারুণ টুপিটা বিশেষ বিশেষ অকেশানে এবং রাতের টহলে বেরুবার সময় ব্যবহার করছি । খুবই নরম, গরম এবং আরামের টুপি । অনেক ধন্যবাদ তোমাকে । এবং বাবাকেও । কিন্তু আজ চতুর্দিক থেকে যেমন এলোমেলো হাওয়া দিচ্ছে তোমার ভীষণ অপছন্দের বাঁদুরে টুপিকেই তলব করতে হয়েছে । অবশেষে এই সিদ্ধান্তেই আসতে হয়েছে যে দেশোয়ালি পোশাক ছাড়া দেশোয়ালি শীতের মোকাবিলা করা যায় না । এবারে ঠাণ্ডা তো বেশ দেরী করেই এলো মনে হচ্ছে, গতরাতের বৃষ্টির নোটিস জারি করে এখানে ঠাণ্ডা যেন তার রাজধানী অন্য স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে রাজার মতোই পাটে বসলো আজ থেকে ।
চারদিকে মরা আর ঝরা পাতার ভীড়। আমার বাংলোর সীমানার কাছে একটি শিমুলতলিতে বিচিত্র-বর্ণর ঝরা পাতার স্তূপের মধ্যে একটি হলুদ বসন্ত পাখি মরে পড়ে আছে। বারান্দাতে বসেই দেখতে পাচ্ছি।
এক সময় হলুদ-বসন্ত আমার প্রিয়তম পাখি ছিলো । যখন আমি ছোট ছিলাম । অবুঝ ছিলাম । যখন ভালোবাসবার ও ঘৃণা করারও ক্ষমতা অসীম ছিলো। যখন যে-কোনো সিদ্ধান্তেই পৌঁছে যেতে পারতাম টর্নার্ডোর ঝড়ের মতো দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে ছুটে কিন্তু হলুদ-বসন্ত পাখির প্রতি ভালোবাসারই মতো আমার বুকের মধ্যে আজ অনেক কিছুই মরে গেছে, ঠাণ্ডা হয়ে গেছে । অনেক কিছুই ঝরে গেছে শীতের ঝরা-পাতারই মতো আমার বুক থেকে।
তুমি পাহাড়ে জুম্-চাষ দেখেছো ?
শূন্যতার মধ্যে আবার জন্মেওছে কিছু । আমি আজ জেনেছি যে এই জীবনে, পৃথিবীতে ; কিছুমাত্রই কেড়ে রাখবার, জোর করে ধরে রাখবার ক্ষমতা আমার এই দুটি শীর্ণ হাতে নেই । হয়তো কারো হাতেই নেই । জেনেছি যে ভালোবাসারই আর এক নাম ঘৃণা । আর ঘৃণারই, ভালোবাসা । কোনো আনন্দ বা সুখবরেই আজ আর আমি পুলকিত বা চমকৃত হই না । যেমন কোনো দুঃখে বা আঘাতেও ভেঙে পড়ি না, বাঘেদের রাজত্বে থেকে থেকে, টাইগার প্রোজেক্টের কর্মচারী হয়ে বাঘেদের চরিত্রানুগ কিন্তু কিছু বেপরোয়া দোষ ও গুণের সমন্বয় ঘটে যাচ্ছে বোধহয় ভিতরে ভিতরে । অজানিত। বাইরে থেকে যা বোঝার আদৌ উপায় নেই । এই ঘটনা বা দুর্ঘটনা যাইই বলো তা ঘটছে নিঃশব্দে, অস্ত্রে রক্তক্ষরণেরই মতো ।
তুমি যে শ্রুতির কাছ থেকে আমার সম্বন্ধে অনেক কিছু জেনেছো তা জেনে আমার একদিকে যেমন স্বস্তি লাগছে অন্য দিকে লজ্জাও।
অনেক কিছু জানতে চেয়ে তোমার পৌনঃপুনিক অনুরোধের জবাবে চুপ করেই ছিলাম । কিন্তু জবাবে সত্যি কথাটা একদিন বলতেই হতো। তা শ্রুতির চিঠিই তোমাকে জানিয়ে দিলো বলে স্বস্তিবোধ করছি।
আর লজ্জা বোধ করছি এই ভেবে যে, এই সব জেনে শুনে তোমার কোমল ও সুকুমার মনে আমার প্রতি একধরনের সহানুভূতি বা অনুকম্পার বোধ জাগরুক হবে হয়তো যা আদৌ আমার কাম্য নয়।
জীবনের কোনো দৌড়েই আমি হ্যান্ডিকাপ প্রত্যাশা করি না । প্রত্যেকটি সম্পর্কও এক একটি দৌড় । হ্যান্ডিকাপের সুযোগ নিয়ে যারা দৌড়োয় তাদের জিত এবং হার দুইই সমান লজ্জার । তোমার আমার মধ্যে যে সুন্দর একটি সখ্যর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো তা আমার সম্বন্ধে তোমার এই খবর জানাতে বিঘ্নিত হবার আশঙ্কা আছে।
ঋতি, আমি তোমার কাছ থেকে মায়া, দয়া, অনুকম্পা, সহানুভূতি কিছুই চাই না । যেমন ছিলো আমাদের চিঠির সম্পর্ক তেমনই স্নিগ্ধ প্রীতির রসে উজ্জ্বল থাকুক এইটুকুই আমার কাম্য।
দুঃখের বিষয়, আমরা এমনই এক সমাজে বাস করি যেখানে আমরা নিজেদের সম্বন্ধে যতটুকুই জানি তার চেয়ে অনেকই বেশি জানে অপরে । শ্রুতি কার কাছে কী শুনেছেন জানি না আমার চলে-যাওয়া স্ত্রী সম্বন্ধে । তোমাকে কী এবং কতটুকু জানিয়েছেন তাও জানি না।
পরে, কখনও তোমাকে জানাবো সব কথা সময় ও সুযোগ মতো । আপাতত শুধু এইটুকুই জেনো যে তিনি এখনও আমাকে চিঠি লেখেন । আমাদের বিবাহিত সম্পর্ক ছিলো মাত্র তিন মাসের । এখন তা হয়েছে আজীবনের । এক আশ্চর্য প্রীতি ও সখ্যতার । অনেকটা তোমার সঙ্গে আমার যেমন একটি সম্পর্ক গড়ে উঠছে চিঠির মাধ্যমে ধীরে ধীরে, তেমনই । এও জেনো ঋতি যে আমার দোষ যেমন ছিলো না, দোষ ছিলো না তারও একটুও । সে বেচারি আমাকে সখ করে ছেড়ে যায়নি । সে সম্পূর্ণই নিরুপায় ছিলো । তাছাড়া ছেড়ে সে যায়নি। আমিই জোর করেছিলাম ছেড়ে যেতে।
তুমি কখনও শকুনদের জানোয়ার বা মানুষ ছিঁড়ে খেতে দেখেছো ? না দেখে থাকলে, কখনও দেখো না। আমাদের এই সমাজ, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন চেনা পরিচিতদের মধ্যে অধিকাংশই ঐ শকুনদেরই মতো । দুর্দৈবে পড়লে তবেই বোঝা যায়। যদি তারা একবার জানতে পেরে যায় যে তুমি পড়েছো বা মরেছো (কথাটা আক্ষরিক এবং প্রতীকীও) সঙ্গেই প্রায় অদৃশ্য থেকে, বহু দূর বন-পর্বত নদী-সমুদ্র শহর পথ-ঘাটের ওপর দিয়ে ধ্বস্-ধ্বস্ আওয়াজ করে বড় বড় ডানায় উড়ে এসে তোমার চারধারে ঘিরে বসবে তারা। গাছের উপরে, পাথরে, বাড়ির দেওয়ালে মাল্টিস্টোরিড বাড়ির ছাদের প্যারাপেটে— অসহায় নিরুপায় তোমাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে খাবে বলে। দেখো না । কখনও দেখো না শকুনদের ভোজ । আজকে আমি তোমাকে নীতির কথা কিছু বলবো না । আমার স্ত্রীর নাম ছিলো নীতি । বলবো না কারণ আজকে চারদিকে বড় আলোর সমারোহ । আকার বড় বেশি নীল । আজকে দুঃখ-কষ্টর কথা থাক।
তাবলে আমার নিজের কিন্তু কোনো দুঃখ নেই। আমার শুভানুধ্যায়ীদের দেওয়া দুঃখ, আমার অশুভানুধ্যায়ীদের দেওয়া দুঃখ, এমনকি পৃথিবীর অচেনা মানুষের দুঃখও আমাকে বড় ভারাক্রান্ত করে । কেন করে জানি না । আমার মতো অতিক্ষুদ্র একজন মানুষকে । কিন্তু করে।
আমার কারণে তুমি একটুও দুঃখিত হয়ো না । সত্যি বলছি । আমার নিজস্ব কোনো দুঃখ নেই।
বিশ্বাস কোরো কথাটা । নেই । ভালো থেকো ।

ইতি—রাজর্ষি

‘সিটি অব জয়’ আমার কাছে আছে । আগেই পড়েছি । তবে তোমার উপহার দেওয়া বলে এটিও রেখে দেবো। বইটি আমার ভালো লাগেনি।কেন লাগেনি তা বলতে গেলে অনেক কিছু বলতে হয় । এক কথায় বললে বলব সকলের যা ভালো লাগে আমার তা লাগে না।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত

সবিনয় নিবেদন

দর্শক

ত্রয়োদশ অঙ্কন :

ঋতি রায়
কলকাতা

বেতলা
৬/১২/৮৭

কল্যাণীয়াসু,
তোমার দুখানি চিঠি একই সঙ্গে পেলাম । পেয়েছি গতকাল । গত রাতে এখানে খুব এক চোট ঝড়-বৃষ্টি হয়ে গেলো । কিন্তু সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার । কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে । ঝক্‌ঝকে রোদ । মোটা গরম পাজামা পাঞ্জাবী পরে তার ওপরে গরম-খাদির জহর কোট এবং মোটা আলোয়ান চাপিয়ে বারান্দায় বসে তোমাকে চিঠি লিখছি । আজ রবিবার । তোমার পাঠানো দারুণ টুপিটা বিশেষ বিশেষ অকেশানে এবং রাতের টহলে বেরুবার সময় ব্যবহার করছি । খুবই নরম, গরম এবং আরামের টুপি । অনেক ধন্যবাদ তোমাকে । এবং বাবাকেও । কিন্তু আজ চতুর্দিক থেকে যেমন এলোমেলো হাওয়া দিচ্ছে তোমার ভীষণ অপছন্দের বাঁদুরে টুপিকেই তলব করতে হয়েছে । অবশেষে এই সিদ্ধান্তেই আসতে হয়েছে যে দেশোয়ালি পোশাক ছাড়া দেশোয়ালি শীতের মোকাবিলা করা যায় না । এবারে ঠাণ্ডা তো বেশ দেরী করেই এলো মনে হচ্ছে, গতরাতের বৃষ্টির নোটিস জারি করে এখানে ঠাণ্ডা যেন তার রাজধানী অন্য স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে রাজার মতোই পাটে বসলো আজ থেকে ।
চারদিকে মরা আর ঝরা পাতার ভীড়। আমার বাংলোর সীমানার কাছে একটি শিমুলতলিতে বিচিত্র-বর্ণর ঝরা পাতার স্তূপের মধ্যে একটি হলুদ বসন্ত পাখি মরে পড়ে আছে। বারান্দাতে বসেই দেখতে পাচ্ছি।
এক সময় হলুদ-বসন্ত আমার প্রিয়তম পাখি ছিলো । যখন আমি ছোট ছিলাম । অবুঝ ছিলাম । যখন ভালোবাসবার ও ঘৃণা করারও ক্ষমতা অসীম ছিলো। যখন যে-কোনো সিদ্ধান্তেই পৌঁছে যেতে পারতাম টর্নার্ডোর ঝড়ের মতো দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে ছুটে কিন্তু হলুদ-বসন্ত পাখির প্রতি ভালোবাসারই মতো আমার বুকের মধ্যে আজ অনেক কিছুই মরে গেছে, ঠাণ্ডা হয়ে গেছে । অনেক কিছুই ঝরে গেছে শীতের ঝরা-পাতারই মতো আমার বুক থেকে।
তুমি পাহাড়ে জুম্-চাষ দেখেছো ?
শূন্যতার মধ্যে আবার জন্মেওছে কিছু । আমি আজ জেনেছি যে এই জীবনে, পৃথিবীতে ; কিছুমাত্রই কেড়ে রাখবার, জোর করে ধরে রাখবার ক্ষমতা আমার এই দুটি শীর্ণ হাতে নেই । হয়তো কারো হাতেই নেই । জেনেছি যে ভালোবাসারই আর এক নাম ঘৃণা । আর ঘৃণারই, ভালোবাসা । কোনো আনন্দ বা সুখবরেই আজ আর আমি পুলকিত বা চমকৃত হই না । যেমন কোনো দুঃখে বা আঘাতেও ভেঙে পড়ি না, বাঘেদের রাজত্বে থেকে থেকে, টাইগার প্রোজেক্টের কর্মচারী হয়ে বাঘেদের চরিত্রানুগ কিন্তু কিছু বেপরোয়া দোষ ও গুণের সমন্বয় ঘটে যাচ্ছে বোধহয় ভিতরে ভিতরে । অজানিত। বাইরে থেকে যা বোঝার আদৌ উপায় নেই । এই ঘটনা বা দুর্ঘটনা যাইই বলো তা ঘটছে নিঃশব্দে, অস্ত্রে রক্তক্ষরণেরই মতো ।
তুমি যে শ্রুতির কাছ থেকে আমার সম্বন্ধে অনেক কিছু জেনেছো তা জেনে আমার একদিকে যেমন স্বস্তি লাগছে অন্য দিকে লজ্জাও।
অনেক কিছু জানতে চেয়ে তোমার পৌনঃপুনিক অনুরোধের জবাবে চুপ করেই ছিলাম । কিন্তু জবাবে সত্যি কথাটা একদিন বলতেই হতো। তা শ্রুতির চিঠিই তোমাকে জানিয়ে দিলো বলে স্বস্তিবোধ করছি।
আর লজ্জা বোধ করছি এই ভেবে যে, এই সব জেনে শুনে তোমার কোমল ও সুকুমার মনে আমার প্রতি একধরনের সহানুভূতি বা অনুকম্পার বোধ জাগরুক হবে হয়তো যা আদৌ আমার কাম্য নয়।
জীবনের কোনো দৌড়েই আমি হ্যান্ডিকাপ প্রত্যাশা করি না । প্রত্যেকটি সম্পর্কও এক একটি দৌড় । হ্যান্ডিকাপের সুযোগ নিয়ে যারা দৌড়োয় তাদের জিত এবং হার দুইই সমান লজ্জার । তোমার আমার মধ্যে যে সুন্দর একটি সখ্যর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো তা আমার সম্বন্ধে তোমার এই খবর জানাতে বিঘ্নিত হবার আশঙ্কা আছে।
ঋতি, আমি তোমার কাছ থেকে মায়া, দয়া, অনুকম্পা, সহানুভূতি কিছুই চাই না । যেমন ছিলো আমাদের চিঠির সম্পর্ক তেমনই স্নিগ্ধ প্রীতির রসে উজ্জ্বল থাকুক এইটুকুই আমার কাম্য।
দুঃখের বিষয়, আমরা এমনই এক সমাজে বাস করি যেখানে আমরা নিজেদের সম্বন্ধে যতটুকুই জানি তার চেয়ে অনেকই বেশি জানে অপরে । শ্রুতি কার কাছে কী শুনেছেন জানি না আমার চলে-যাওয়া স্ত্রী সম্বন্ধে । তোমাকে কী এবং কতটুকু জানিয়েছেন তাও জানি না।
পরে, কখনও তোমাকে জানাবো সব কথা সময় ও সুযোগ মতো । আপাতত শুধু এইটুকুই জেনো যে তিনি এখনও আমাকে চিঠি লেখেন । আমাদের বিবাহিত সম্পর্ক ছিলো মাত্র তিন মাসের । এখন তা হয়েছে আজীবনের । এক আশ্চর্য প্রীতি ও সখ্যতার । অনেকটা তোমার সঙ্গে আমার যেমন একটি সম্পর্ক গড়ে উঠছে চিঠির মাধ্যমে ধীরে ধীরে, তেমনই । এও জেনো ঋতি যে আমার দোষ যেমন ছিলো না, দোষ ছিলো না তারও একটুও । সে বেচারি আমাকে সখ করে ছেড়ে যায়নি । সে সম্পূর্ণই নিরুপায় ছিলো । তাছাড়া ছেড়ে সে যায়নি। আমিই জোর করেছিলাম ছেড়ে যেতে।
তুমি কখনও শকুনদের জানোয়ার বা মানুষ ছিঁড়ে খেতে দেখেছো ? না দেখে থাকলে, কখনও দেখো না। আমাদের এই সমাজ, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন চেনা পরিচিতদের মধ্যে অধিকাংশই ঐ শকুনদেরই মতো । দুর্দৈবে পড়লে তবেই বোঝা যায়। যদি তারা একবার জানতে পেরে যায় যে তুমি পড়েছো বা মরেছো (কথাটা আক্ষরিক এবং প্রতীকীও) সঙ্গেই প্রায় অদৃশ্য থেকে, বহু দূর বন-পর্বত নদী-সমুদ্র শহর পথ-ঘাটের ওপর দিয়ে ধ্বস্-ধ্বস্ আওয়াজ করে বড় বড় ডানায় উড়ে এসে তোমার চারধারে ঘিরে বসবে তারা। গাছের উপরে, পাথরে, বাড়ির দেওয়ালে মাল্টিস্টোরিড বাড়ির ছাদের প্যারাপেটে— অসহায় নিরুপায় তোমাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে খাবে বলে। দেখো না । কখনও দেখো না শকুনদের ভোজ । আজকে আমি তোমাকে নীতির কথা কিছু বলবো না । আমার স্ত্রীর নাম ছিলো নীতি । বলবো না কারণ আজকে চারদিকে বড় আলোর সমারোহ । আকার বড় বেশি নীল । আজকে দুঃখ-কষ্টর কথা থাক।
তাবলে আমার নিজের কিন্তু কোনো দুঃখ নেই। আমার শুভানুধ্যায়ীদের দেওয়া দুঃখ, আমার অশুভানুধ্যায়ীদের দেওয়া দুঃখ, এমনকি পৃথিবীর অচেনা মানুষের দুঃখও আমাকে বড় ভারাক্রান্ত করে । কেন করে জানি না । আমার মতো অতিক্ষুদ্র একজন মানুষকে । কিন্তু করে।
আমার কারণে তুমি একটুও দুঃখিত হয়ো না । সত্যি বলছি । আমার নিজস্ব কোনো দুঃখ নেই।
বিশ্বাস কোরো কথাটা । নেই । ভালো থেকো ।

ইতি—রাজর্ষি

‘সিটি অব জয়’ আমার কাছে আছে । আগেই পড়েছি । তবে তোমার উপহার দেওয়া বলে এটিও রেখে দেবো। বইটি আমার ভালো লাগেনি।কেন লাগেনি তা বলতে গেলে অনেক কিছু বলতে হয় । এক কথায় বললে বলব সকলের যা ভালো লাগে আমার তা লাগে না।

সর্ব্বশেষ প্রকাশিত