এক
জীবনে নিকটতম দুঃখটাই যে সর্বাপেক্ষা অধিক কষ্টদায়ক তাহা মর্মে মর্মে অনুভব করিতেছিলাম। আমার ধার আছে, গৃহিণী কুৎসিত, সামান্য কেরাণী-গিরি করিয়া খাই এবং তাহা লইয়া গর্ব করিয়া বেড়াই, কলেজে আমার অপেক্ষা যে-সব সহপাঠী নিম্নস্তরে ছিল কর্মজীবনে তাহারা কেবল মুরুব্বির ভোরে উঠিয়া গিয়াছে—এই প্রকার ক্ষুদ্র- বৃহৎ নানারূপ দুঃখ আমার ছিল। কিন্তু বর্তমান মুহূর্তে আমার সর্বাপেক্ষা কষ্টের কারণ এই বুড়ীটা। এই বুড়ী তাহার ময়লা শতছিন্ন দুর্গন্ধ কাপড়টা লইয়া আমার নাকের সম্মুখ হইতে সরিয়া গেলে বাঁচি। জানালা দিয়৷ দেখিতে পাইতেছি সন্ধ্যার আকাশ বহুবর্ণে বিচিত্রিত হইয়া উঠিয়াছে—কিন্তু এই বুড়ীটা না সরিলে…আঃ কি মুস্কিল।
পীড়িতা মাসিমার অসুখের সংবাদ পাইয়া কলিকাতা যাইতে- ছিলাম। মন্থর গতি প্যাসেঞ্জার ট্রেণ, গ্রীষ্মকাল এবং আমার টিকেট তৃতীয় শ্রেণীর। সুতরাং যে কষ্টভোগ করিতেছিলাম তাহা দুঃসহ হইলেও নায্য—এইজাতীয় একটা সান্ত্বনা মনে গড়িয়া তুলিতেছিলাম এমন সময় পিছন হইতে অৰ্দ্ধমলিন-পরিচ্ছদধারী এক ভদ্রলোক বলিলেন—
“রাস্তাটা থেকে সরে দাড়ান একটু। ‘বাথরুনে’ যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করবেন না। একটু সরুন দয়া করে’।”
যথাসাধ্য দেহ-সঙ্কোচ করিয়া ভদ্রলোককে পথ করিয়া দিলাম । ভদ্রলোক ‘বাথরুম’ হইতে প্রত্যাবর্তনের মুখে বলিলেন – “ এখানে দাড়িয়ে কষ্ট পাচ্ছেন কেন ? ওধারে চলুন । ”
জিজ্ঞাসা করিলাম—“ওদিকে কি জায়গা আছে ?”
“আহা চলুনই না—”
বুড়ীর সান্নিধ্য হইতে পরিত্রাণ পাইবার জন্য উন্মুখ হইয়া ছিলাম। সুতরাং ভদ্রলোকের অনুসরণ করিয়া কামরাটির অপর প্রান্তে গিয়াস উপস্থিত হইলাম । ভদ্রলোক অত্যন্ত সহৃদয়ভাবে প্রস্তাব করিলেন— “বসুন, আমার এই তোরঙ্গটার ওপরই বসুন। আসল ‘ষ্টিল’ – আপনার মত দশজন বসলেও এর কিছু হবে না।”
তোরঙ্গটির চেহারা ভালই বলিতে হইবে। তাহার দৃঢ়ত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান হইবার কিছু ছিল না। বস্তুত আমি সন্দেহ প্রকাশও করি নাই । তথাপি ভদ্রলোক বলিলেন —“আমার জিনিষ ভাল না দিলে নিস্তার আছে ছগগন লালের । তার মুনিব হ’ল গিয়ে আমার হাতের মুঠোর মধ্যে।”
আমি ট্রাঙ্কটির উপর বসিয়া ছিলাম।
একটু মৃদু হাসিয়া শুধু বলিলাম—“তাই নাকি ? ”
“তাই নাকি মানে ? ছগগন লালের সাধ্য আছে আমাকে খারাপ জিনিষ দেয় ? তার মনিব বৈজু প্রসাদ হ’ল গিয়ে আমার খাতক।”
ভদ্রলোককে খুশী করিবার জন্য আমি আবার বলিলাম— হ্যাঁ, সুন্দর মজবুত ট্রাঙ্ক আপনার । দেখতেও চমৎকার।”
ভ্রূযুগল উর্দ্ধোৎক্ষিপ্ত করিয়া ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করিলেন—“দাম কত হবে আন্দাজ করুন দেখি।”
নিরীহভাবে বলিলাম—“টাকা কুড়ির ত কম নয়ই । কত ?”
ভদ্রলোক অকৃত্রিম আনন্দে হা হা করিয়া উঠিলেন এবং হাসি শেষ করিয়া বলিলেন— “আপনার দোষ নেই— হয়ত আসল দাম ওই রকমই হবে। আমি গণ্ডা বারো পয়সা দিয়েছিলাম।”
সত্যই অবাক হইয়া গেলাম ।
“বলেন কি ? বারো আনা ?”
ভদ্রলোক বলিতে লাগিলেন — “তাও নিতে চায় না । ছাগগনকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে একটা টাকা দিয়েছিলাম, তার থেকেও চার-গণ্ডা পন্নসা ফিরিয়ে দিলে !”
আমি আর কিছু বলিলাম না । ছগগন লালের মনিব বৈষ্ণু প্রসাদ যখন ইহার করায়ত্ত তখন ট্রাঙ্ক লইয়া ইনি ছিনিমিনি খেলিতে পারেন। বলিবার কিছু নাই । বসিতে পাইয়াছি — বসিয়া রহিলাম ।
আমাকে নীরব দেখিয়া ভদ্রলোক আবার বলিলেন— “যদিও আমি সাধারণ মানুষ, কিন্তু লোকে আমার খাতির করে খুবই। এই দেখুন না—” বলিয়া তিনি হেঁট হইয়া বেঞ্চির নীচ হইতে এক জোড়া ব্রাউন রঙের ভাল ডার্বি ‘সু’ বাহির করিলেন এবং স্মিতমুখে প্রশ্ন করিলেন— “এর দাম কত হবে বলুন ত ?”
“পাঁচ ছ’ টাকা ত মনে হয়।” ভয়ে ভয়ে বলিলাম ।
“রায় মশায় কিন্তু আমার কাছ থেকে চার গণ্ডা পয়সার বেশী কিছুতে নিলেন না। কারণও অবশ্য আছে। রায় মশায়ের ছেলের চাকরিটা এক কথায় করে দিলাম কি-না। টমসন সাহেবও আমার হাতের মুঠোর মধ্যে।”
চকিতের মধ্যে বুঝিলাম এই শীর্ণকান্তি ভদ্রলোক সামান্য ব্যক্তি নহেন। … সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনাইয়া আসিতেছে । গাড়ির বাতিটা জ্বলিয়া উঠিল। আড়চোখে একবার চাহিয়া দেখিলাম, ভদ্রলোক ঢুলিতেছেন। গাড়ির অপর প্রান্তে দেখিলাম সেই বুড়িটা বেঞ্চিটার উপর জড়সড় হইয়া বসিয়া আছে। স্বল্পালোকিত তৃতীয় শ্রেণীর কামরার মধ্যে ওই বুড়ীটাকে অত্যন্ত কদর্য বলিয়া মনে হইতে লাগিল।
দুই
“ওটা কি পড়ছেন ?”
“ও একটা মাসিক পত্র। একটা গল্প পড়ছি।”
ভদ্রলোক কোণে ঠেস্ দিয়া ঢুলিতেছিলেন। আমিও পকেট হইতে একটি মাসিক পত্রিকা বাহির করিয়া পড়িতে সুরু করিয়াছিলাম। ভদ্রলোক হাই তুলিরা টুকি দিতে দিতে বলিলেন—“কার লেখা ?” “পান্নালাল চক্রবর্ত্তীর ।”
“মেয়েটি লেখে ভালই কিন্তু ওর লেখার চেয়ে ওর—”
“পান্নালাল চক্রবর্তী মেয়েমানুষ নাকি ?”
ভদ্রলোক একটু মুচকি হাসিয়া উত্তর দিলেন- “ মেয়েমানুষ শুধু নয়—-
একেবারে তন্বী—গৌরী — যুবতী !”
আমি সত্যই বিস্মিত হইয়া গিয়াছিলাম। পুলকিত শিহরণে সমস্ত সত্তা বিদ্যুতের মত একটা আকুল হইয়া উঠিল। পান্নালাল চক্রবর্ত্তীর লেখা আমার ভাল লাগে। শুধু ভাল লাগে বলিলেই পর্যাপ্ত হয় না, তাঁহার লেখার আমি একজন ভক্ত-পাঠক। যেখানেই পান্নালা চক্রবর্তীর লেখা দেখিতে পাই সাগ্রহে পড়িয়া ফেলি। সেই পান্নালাল মেয়ে মানুষ ! তন্বী — গৌরী—যুবতী !
ভদ্রলোক বলিতে লাগিলেন — “টুনি ত এই সেদিনের মেয়ে ! সেদিন পর্যন্ত ফ্রক পরে বেণী দুলিয়ে বেড়িয়েছে। মেয়েটা ছেলে-বেলা থেকেই বেশ চালাক-চতুর। এক কথায় ওরকম মেয়ে আমি এদেশে বড় একটা দেখিনি—”
বলা বাহুল্য কৌতুহলী হইয়াছিলাম ।
জিজ্ঞাসা করিলাম—“ কি রকম ?”
“ওর মত ঘোড়ায় চড়তে, সাঁতার কাটতে, সাইকেল চালাতে, গান গাইতে, ফুটবল খেলতে পারে এরকম ছেলেই আমাদের দেশে কম আছে। ভূষণকে বলেছিলাম স্বাধীন দেশে জন্মালে ও-মেয়ে একটা রিজিয়া, এলিজাবেথ হ’ত। অন্তত পক্ষে একটা নামজাদা সিনেমা ষ্টার । “ভূষণ কিন্তু বিয়ের জন্যে অস্থির হ’ল—”
উৎকণ্ঠিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম – “ভূষণ কে ?”
“ভূষণ হল গিয়ে টুনির বাপ ! বিয়ে দিলে তবে ছাড়লে। বিয়ের পর ও কলম ধরেছে । তাও একবার লেখার দৌড়টা দেখুন ।
ভদ্রলোক আবার ঢুলিতে লাগিলেন ।
মনে হইল ‘অস্ফুটস্বরে যেন একবার বলিলেন — – টুনি— পান্নালাল চক্ৰবৰ্তী—হেঁ!”
একটা ষ্টেশনে আসিয়া ট্রেন থামিল ।
আমার ঠিক সামনের বেঞ্চে একদল সাঁওতাল বসিয়াছিল, তাহারা সদলবলে নামিয়া গেল। আমি বেঞ্চটি খালি পাইয়া সটান গিয়া তাহাতে শুইয়া পড়িলাম । ফিরিয়া দেখিলাম, ভদ্রলোক কোনে বসিয়া ঢুলিতেছেন। উপরের বাঙ্কে একজন স্ফীতোদর ব্যক্তি নাক ডাকছিলেন। তাঁহার মুখ দেখা গেল না। অনুমান করিলাম, কোন মাড়োয়ারী হইবেন ।
চক্ষু বুজিয়া শুইয়া আছি । বারংবার একটি কথাই মনে হইতেছে— পান্নালাল চক্ৰবৰ্তী, তন্বী—গৌরী—যুবতী !
তিন
ধপাস করিয়া একটা শব্দ হইল।
ধড়মড় করিয়া উঠিয়া বসিলাম। বাঙ্কের সেই মাড়োয়ারীটি বাঙ্ক হইতে লাফাইয়া নামিয়াছেন, আর কিছু নয়। ভাল করিয়া চাহিয়া দেখিলাম, আমার অনুমান ভুল হইয়াছিল। ভদ্রলোক মাড়োয়ারী নয়- বাঙালীই । খোঁচা খোঁচা গোঁফওয়ালা স্থূলাকার ভদ্রলোক লাফাইয়া নামিতে গিয়া মুক্তকচ্ছ ইয়া পড়িয়াছিলেন! সামলাইয়া লইয়া এক জোড়া বড় বড় সদ্য ঘুম-ভাঙা লাল চোখ মেলিয়া জানালার দিকে চাহিয়া রহিলেন।
প্রভাত হইয়াছিল। ফিরিয়া দেখিলাম তোরঙ্গের মালিক সেই ভদ্রলোকও আর ঢুলিতেছেন না। ‘ষ্টেটম্যান’ লইয়া ‘ওয়ান্টেড’ পৃষ্ঠায় মনঃসংযোগ করিয়াছেন । আমি আর একবার শুইয়া ঘুমাইবার চেষ্টা করিলাম। ঘুম আসিল না। তথাপি চোখ বুজিয়া পড়িয়া রহিলাম । কিন্তু চোখও খুলিতে হইল। ট্রেণ আসিয়া ব্যাণ্ডেল ষ্টেশনে দাঁড়াইল । চায়ের আশায় উঠিয়া বসিলাম এবং হাঁকাহাঁকি করিয়া মাটির ভাঁড়ে খানিকটা চা যোগাড় করিয়া ফেলিলাম ।
খোঁচা-খোঁচা গোঁফের অধিকারী এবং তোরঙ্গের মালিক উভয়েই দেখিলাম চা লইলেন । পান্নালাল চক্রবর্তীর প্রসঙ্গটা আর একবার উত্থাপিত করিব ভাবিতেছি, এমন সময় বিনামেঘে বজ্রপাতের মত এক অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিয়া গেল। পালা ছিপছিপে চশমাধারী একটি যুবক আমাদের গাড়ীর সম্মুখে দাড়াইয়া সোল্লাসে বলিয়া উঠিলেন, “আরে একি, পান্নালাল বাবু যে ! কোথা যাচ্ছেন ?”
খোঁচা গোফের মালিক মৃদু হাসিয়া উত্তর দিলেন — “ কোন্নগর।”
“দেখা হয়ে গেছে যখন তখন আর যেতে দিচ্ছি না আপনাকে । কোন্নগর ওবেলা যাবেন। এবেলা এখানেই নেমে যান। অনেকদিন সাহিত্য-চর্চা করা হয়নি । এ মাসের “কাহিনী-কুঙ্কুম” কাগজে আপনার “চলতি চাকা’ পড়লাম। চমৎকার হয়েছে গল্পটা !”
স্বপ্ন দেখিতেছি নাকি ?
কিন্তু না–থার্ড ক্লাশ গাড়ীতে উবু হইয়া বসিয়া এক ভাঁড় বিশ্রী চা হন্তে স্বপ্ন দেখাও ত সম্ভব নয় । “চলতি চাক৷” গল্প আমিও কাল রাত্রে পড়িয়াছি এবং “কাহিনী-কুঙ্কুম” এখনও আমার পকেটে আছে ।
সবিস্ময়ে শুনিলাম ট্রাঙ্কের স্বত্বাধিকারী মহাশয়ও গদগদকণ্ঠে বলিতেছেন—“আপনিই প্রসিদ্ধ গল্পলেখক পান্নালাল চক্রবর্তী ?” ছিপছিপে ভদ্রলোক সগর্বে বলিলেন— “হ্যাঁ, ইনিই ।
ট্রাঙ্কের স্বত্বাধিকারী বলিতে লাগিলেন—“নমস্কার, নমস্কার, এমন অপ্রত্যাশিতভাবে দেখা হ’ল। এতক্ষণ একসঙ্গে এলাম, পরিচয় ছিল না । আপনার ভক্ত-পাঠক একজন আমি। চললেন তা হ’লে ? আচ্ছা, নমস্কার ।”
ছিপছিপে পাতলা ভদ্রলোকের সহিত বিখ্যাত গল্পলেখক পান্নালাল চক্রবর্তী নামিয়া গেলেন। ট্রেণও ছাড়িয়া দিল ।
মাটির ভাঁড়টা জানালা দিয়া টান মারিয়া ফেলিয়া দিলাম এবং ট্রাঙ্কের মালিকের দিকে রুখিয়া ফিরিয়া বসিলাম।
সংক্ষেপেই বলিলাম – “এটা কি রকম হ’ল ?”
“কোন্টা ?”
বিস্মিত হইয়া ভদ্রলোক পাল্টা প্রশ্ন করিলেন।
“বাঃ—কাল রাত্রে আমাকে আপনি বললেন পান্নালাল চক্রবর্তী এক জন মেয়েমানুষ——তাকে আপনি চেনেন – অথচ —— ”
নির্বিকারভাবে ভদ্রলোক বলিলেন— “আর কি কি বলেছিলাম ?” “আর বলেছিলেন আপনার ওই ট্রাঙ্কের দাম বারো আনা—জুতোর দাম চার আনা—”
গম্ভীরভাবে ভদ্রলোক বলিলেন, “যিনি বলেছিলেন তিনি চলে গেছেন। আমি অন্য লোক । ”
আমি উত্তরোত্তর বিস্মিত হইতেছিলাম ।
“অন্য লোক মানে ?”
অর্থাৎ আমার ‘এ্যাংগল অব ভিশন’ মানে কিনা দৃষ্টিকোণ এখন একেবারে অন্যপ্রকার ।”
“ঠিক বুঝতে পারলাম না –”
সহসা ও লোকের মুখ হাসিতে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল।
এক মুখ হাসিয়া তিনি বলিলেন— “পাচ পয়সার মোদকের নেশা কতক্ষণ আর থাকবে বলুন! কাল নেশার ঘোরে মনে হয়েছিল হয়ত পান্নালাল চক্রবর্তী মেয়েমানুষ— ট্রাঙ্কের দাম বারো আনা—জুতোর দাম চার আনা। এখন নেশা কেটে গেছে, এখন দেখছি পান্নালালের গোঁফ আছে এবং মনে পড়েছে এই ট্রাঙ্ক ও জুতোর দাম যথাক্রমে সাড়ে তের ও পৌনে সাত টাকা দিয়েছিলাম। ‘থিওরি অব রিলেটিভিটি’—বুঝলেন না?”
বুঝিলাম এবং চুপ করিয়া রহিলাম ।
হঠাৎ গাড়ীর অপর প্রান্ত হইতে শুনিলাম—
“আরে বাবুয়া তু কাঁহা … ”
চাহিয়া দেখি সেই দুৰ্গন্ধ বুড়ীটা আমাকে ডাকিতেছে।
রাত্রে অত বুঝিতে পারি নাই, এখন চিনিলাম মাসিমার বাড়ীর পুরাতন দাই রুক্মিনিয়া । মাসিমারা যখন বেহারে ছিলেন তখন হইতে রুকুমিনিয়া মাসিমার বাড়ীতে আছে। ছুটিতে দেশে গিয়াছিল, মাসিমার ‘অসুখ শুনিয়া আসিতেছে ।
বুড়ীর কাছে গিয়া বসিলাম। বুড়ী ‘মহাবীরঙ্গী’র নিকট পূজা চড়াইয়া আসিয়াছে— মাসিমা যাহাতে ভাল হইয়া যান। মলিন বসনান্তরাল হইতে মহাবীরজীর ‘পরসাদ’ বাহির করিয়া খাইতে দিল। সানন্দে খাইয়া ফেলিলাম ।
থিওরি অব রিলেটিভিটি’ই বটে ।