
জগদীশচন্দ্র বসু
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন প্রথিতযশা ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী, উদ্ভিদবিজ্ঞানী এবং উদ্ভাবক। তিনি ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলার সন্নিকটে জন্মগ্রহণ করেন।
জগদীশচন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর জেলার এক গ্রাম্য বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে তিনি হেয়ার স্কুল ও সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল এবং কলেজে অধ্যয়ন করেন। বিজ্ঞানমনস্কতা জাগ্রত হয় রেভারেন্ড ফাদার লাফোন্টের প্রভাবে। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ইংল্যান্ডে গমন করেন এবং কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাইস্ট কলেজ থেকে স্নাতক হন; পাশাপাশি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বি.এসসি. ডিগ্রি অর্জন করেন।
ভারতে ফিরে এসে প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। সেখানেই তিনি গবেষণায় মনোনিবেশ করেন এবং বিদ্যুৎতরঙ্গ ও বেতার যোগাযোগ বিষয়ে মৌলিক আবিষ্কার করেন। তাঁর উদ্ভাবিত ‘ক্রিস্টাল রিসিভার’ বেতার যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্যতম প্রাথমিক উদ্ভাবন। তিনি প্রমাণ করেন যে, অদৃশ্য আলো দৃশ্য আলোকের মতোই ধর্মসম্পন্ন।
পরবর্তী সময়ে জীব ও জড় বস্তুর সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে তিনি বিস্তৃত গবেষণা করেন। তাঁর গবেষণায় দেখা যায়, জীব এবং নির্জীব উভয় বস্তুই নির্দিষ্ট উদ্দীপনার প্রতি সাড়া দিতে সক্ষম। এসব গবেষণার জন্য তিনি ‘ক্রেসকোগ্রাফ’সহ বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যা উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা পরিমাপ করতে সক্ষম।
১৯১৭ সালে তিনি কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন “বসু বিজ্ঞান মন্দির”—এটি ছিল ভারতের অন্যতম প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার। তিনি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানমঞ্চে ভারতীয় বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯১৬ সালে তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হয়, এবং ১৯২০ সালে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃত।
তিনি ২৩ নভেম্বর ১৯৩৭ (বয়স ৭৮) গিরিডি, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারতে মৃত্যু বরর্ণ করেন।
তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাসমূহের মধ্যে রয়েছে:
- Responses in the Living and Non-living (1902)
- Plant Responses as a Means of Physiological Investigation (1906)
- Comparative Electrophysiology (1907)
- The Physiology of the Ascent of Sap (1923)
- বাংলা গ্রন্থ: অব্যক্ত